ঢাকা, সোমবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

শেরপুরে হত্যা মামলায় ৩ কিশোরের যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০১ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১৭
শেরপুরে হত্যা মামলায় ৩ কিশোরের যাবজ্জীবন

শেরপুর: শেরপুরে কিশোর বিল্লাল (১২) হত্যা মামলায় ৩ কিশোরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৯ র্মাচ) বিকেলে শেরপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো-ঝিনাইগাতী উপজেলার গিলাগাছা গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে নূর হোসেন (১৬) শেরপুর পৌর শহরের শেরীপাড়া মহল্লার আব্দুর রশিদের ছেলে ছানুয়ার হোসেন ওরফে মান্নান  (১৫) ও একই মহল্লার মৃত শাহাদতের ছেলে বিশু (১৯)।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ছানুয়ার হোসেন জামিন নেওয়ার পর পলাতক রয়েছে।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত ওই ৩ কিশোর রেস্টুরেন্টে কাজ করার পাশাপাশি চুরিও করতো। ২০১১ সালের ২৩ মে নূর হোসেন একটি মোবাইল চুরি করে তা বিক্রি করে। এসময় নবীনগর এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে রেস্টুরেন্ট কর্মচারী বিল্লাল তা দেখে ফেলে ও টাকার ভাগ চায়। কিন্তু নূর হোসেন তাকে টাকা দিতে অস্বীকার করে। পরদিন বিল্লাল কয়েকজনের সামনে নূর হোসেনকে চোর বলে গালি দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নূর হোসেন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মাফিক ২৪ মে রাতে নূর হোসেন তার সহযোগী ছানুয়ার ও বিশু বিল্লালকে ফুঁসলিয়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত হলে নিয়ে সিনেমা দেখায়। পরে তাকে সদর উপজেলা বয়রা পরানপুর ভাটারাঘাট এলাকার মৃগী নদীর তীরে নিয়ে যায়। সেখানে ওই ৩ জন বিল্লালের পা বেঁধে গরুর ধারাল হাড় দিয়ে গলা ও পেট কেটে ফেলে। একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করতে বিল্লালের মলদ্বারে লাঠি ঢুকিয়ে নাড়িভুড়ি বের করে আনে।

পরে মরদেহ একটি ট্রাংকের ভেতর ঢুকিয়ে মৃগী নদীতে ফেলে দেয়। পরদিন জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে ওই ট্রাংকের সন্ধ্যান পায়। পরে পুলিশ বিল্লালের মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই ৩ ঘাতককে আটক করলে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।

পরে সদর থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে ওই ৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৩১ আগস্ট সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. মোস্তাফিজুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন, পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩০০ ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলেও বয়স কম হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। উচ্চ আদালতে যাবো।

তবে এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন ঠান্ডু বলেন, এ রায় শুনে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের নির্মম ও পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করার সাহস পাবেনা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, ০৯ মার্চ, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।