এ উৎসবকে ঘিরে কুষ্টিয়ার লালন আঁখড়াবাড়ীতে চলবে লালন মেলা। স্মরণোৎসব ও মেলাকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা।
দোল পূর্ণিমার চাঁদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে লালন ভক্তদের স্মরণোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সাধু-গুরু ও ভক্তরা দলে দলে এসে সমবেত হবেন লালন সাঁইয়ের আঁখড়ায়। লালন ভক্তদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে লালন আঁখড়াবাড়ি।
শুক্রবার (১০ মার্চ) সকাল থেকে সাধু ভক্তরা আসতে শুরু করেছে আঁখড়াবাড়ীতে। বসতে শুরু করেছে সাঁইজির মাজার প্রাঙ্গণে। রাজবাড়ী থেকে এসেছেন লালন ভক্ত আবুল সাধু (৭৬)।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সাঁইজির দর্শন নিতে এসেছি। দোল পূর্ণিমার সময় এ উৎসবটাই আমাদের কাছে বড়। এখানে আত্মার শান্তির অন্বেষণে আসি আমরা। আমরা যারা সাধু রয়েছি, তারা মনে করি শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই দোল পূর্ণিমা শুরু। তাই গুরুর দর্শন নিতে আজকেই চলে এসেছি।
তিনি আরো বলেন, সাঁইজির কাছাকাছি থাকতে পারবো বলে আগিই এসেছি। ৬০ বছর ধরে সাঁইজির কাছে আত্মার টানে ছুটে আসছি। যতদিন বাঁচবো সাঁইজির টানে যেন এই আঁখড়াবাড়ীতে আসতে পারি।
আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের আগেই সাঁইজির আঁখড়াবাড়ীতে ছোট ছোট আসরে চলছে সাঁইজির গান। বসেছে আধ্যাত্মিক গানের আসর।
দোল পূর্ণিমায় দেশ-বিদেশের নানা বয়সী দর্শনার্থীরা আসেন লালন মেলায়। কেউবা লালন সম্পর্কে জানতে আবার কেউ আসেন লালনের এ মন মাতানো অনুষ্ঠান দেখতে।
এ উৎসব দেখতে এসে অনেকেই লালন প্রেমে মজে যান। বাইরে কালী নদীর পাড় জুড়ে বসবে গ্রামীণ মেলার নজরকাড়া আয়োজন।
লালন মাজারের বাইরে লালন মঞ্চে তৈরি হচ্ছে আলোচনা ও মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতা ও কুষ্টিয়া লালন একাডেমির আয়োজনে এবার ভিন্ন আমেজে স্মরণোৎসব পালনের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সাঁইজির মাজার ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য পরিদর্শন করেন কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এস.এম মেহেদী হাসান।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, লালন স্মরণোৎসবকে ঘিরে লালন মেলা ও লালন মাজার প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র্যাব, পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরাও কাজ করবেন।
তিনি আরো জানান, এবারই প্রথম লালন মেলার নিরাপত্তার জন্য কালীনদীতে পুলিশের স্পেশাল টিম স্পিড বোটের মাধ্যমে টহল দেবে। তাছাড়া মাজারে সিসি ক্যামেরাও থাকবে।
বাউল সম্রাট লালন শাহের জীবদ্দশায় চৈত্র মাসের প্রথম সপ্তাহে পূর্ণিমার রাতে দোল পূর্ণিমার উৎসব পালন করা হতো। সেই থেকে লালন ভক্তরা প্রতি বছর এ উৎসব পালন করে আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫১ ঘণ্টা, ১০ মার্চ, ২০১৭
আরএ