ঢাকা, সোমবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

শীতে শুরু বসন্তে শেষ ১৪তম অধিবেশন

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
শীতে শুরু বসন্তে শেষ ১৪তম অধিবেশন সংসদে প্রধানমন্ত্রী/ছবি: পিআইডি

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছিলো শীতকালে। গত ২২ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির ভাষণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শীতকালীন অধিবেশন। আর শনিবার (১১ মার্চ) রাতে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচনার মধ্যদিয়ে ১৪তম অধিবেশন শেষ  হলো। অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিলো ৩২ দিন।

এই ৩২ কার্যদিবসে ১৭টি বিল উত্থাপন হয়। এরমধ্যে পাস হয় ১০টি বিল।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে ২৬১টি প্রশ্নের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ৯৬টি প্রশ্নের জবাবে দেন। অন্য মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে ৪ হাজার ২৬০টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। এরমধ্যে মন্ত্রীরা ৩ হাজার ১৫৪টি প্রশ্নের উত্তর দেন।

এছাড়াও কার্যপ্রণালী  বিধির ৭১ বিধিতে ১৮৫টি নোটিশের মধ্যে ১২টি নোটিশ গৃহীত হয় এবং ৪টি নোটিশের ওপর আলোচনা হয়। কার্যপ্রণালী বিধির ৭১ (ক) বিধিতে ১৫টি নোটিশ পাওয়া যায়।

সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রই হোক না কেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আরও উন্নত হচ্ছে। কোনো অপশক্তির কাছে আমরা মাথানত করবো না। পাকিস্তানিরা এখনো অপপ্রচার চালাচ্ছে যে মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির যুদ্ধ ছিল না। এটি ছিল ভারতের ষড়যন্ত্র, ‘র’ এর চক্রান্ত। যে দেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য এতো ত্যাগ স্বীকার করেছে, এককোটি মানুষ শরণার্থী হয়েছে- সেখানে এটি কীভাবে সম্ভব?
 
মুক্তিযুদ্ধে ভারতসহ মিত্র দেশগুলোর সহযোগিতার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, ভারতসহ অনেক দেশই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমেরিকাসহ অনেক দেশ পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়ালেও সেসব দেশের জনগণও আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করে পাশে দাঁড়িয়েছিল। ২৫ মার্চ থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনী এদেশে গণহত্যা চালিয়েছিল। এদেশের এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয় ভারত।

তিনি বলেন, কারও এতোটুকু মনুষ্যত্ব থাকলেও যে দেশে গণহত্যা চলে সেদেশের মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে পারে না। বিশ্বের যেসব দেশেই গণহত্যা চলেছে, স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ হয়েছে- সেসব দেশের পাশেই অনেক মিত্রশক্তি দাঁড়িয়েছে। ভারতসহ অনেক দেশই মিত্রশক্তি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন জানিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। কাজেই মিত্রশক্তি থাকাটা কোনো অপরাধ নয়। কিন্তু পাকিস্তানের কাছে সেটাই দোষ।

মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাত্র তিনমাসের মধ্যে এদেশ থেকে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সৈন্য প্রত্যাহারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের যেখানেই কোনো দেশ অন্য দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছে, সেখানেই মিত্রশক্তি ওই দেশে ঘাঁটি গেঁড়ে বসেছে। একমাত্র বাংলাদেশই এর ব্যতিক্রম। ভারতই একমাত্র দেশ যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরও এদেশে ঘাঁটি গেঁড়ে বসেনি। জাতির পিতার অনুরোধে ইন্দিরা গান্ধী মাত্র তিনমাসের মধ্যে সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
 
জাতীয় সংসদে বিরোধীদলের গঠনমূলক ভূমিকার প্রশংসা করে সংসদ নেতা বলেন, জাতীয় সংসদে একসময় থাকার কোনো পরিবেশ ছিল না। এখানে কেবল খিস্তি-খেউড় হতো। জঘন্য ভাষা ব্যবহার হতো। বিএনপি-জামায়াত যখন এই সংসদে ছিল, তখন তাদের খিস্তি-খেউড়ে সংসদে থাকা যেতো না। সংসদের কার্যবিবরণী টেলিভিশনে সরাসরি প্রচার হতো। কিন্তু এখানে যে জঘন্য ভাষা ব্যবহার হতো, কোনো ভদ্র মানুষের পক্ষে সেটি শোনাও সম্ভব হতো না। এখন সেই খিস্তি-খেউড় ও জঘন্য ভাষা নেই। যারা বিরোধীদলে আছেন, তাদের বক্তব্যও গঠনমূলক। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
 
সংবাদপত্রকর্মীদের জন্য নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের দাবি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অধিকাংশ সংবাদপত্রের মালিকই বেসরকারি। বেসরকারি মালিকরা কী করবেন, সেটি তাদের বিষয়। এরপরও আমরা ওয়েজবোর্ড করে দিচ্ছি। ব্যবস্থা নিচ্ছি।

দ্রব্যমূল্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আছে দাবি করে তিনি বলেন, অভাব যাতে মানুষের না থাকে, তার সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা করেছি। নানা প্রকল্পও নেওয়া হচ্ছে। একটি মানুষও আর দরিদ্র থাকবে না, গৃহহারা থাকবে না।

এই অধিবেশন শেষ হওয়ার পর আগামী বাজেট অধিবেশনের আগে আরও একটি সংক্ষিপ্ত অধিবেশন হতে পারে।

**২৫ মার্চের গণহত্যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত

বাংলাদেশ সময়: ০২২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
এসএম/এসকে/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।