ঢাকা, সোমবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

হোলি উৎসবের সার্বজনীন রূপ

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৭
হোলি উৎসবের সার্বজনীন রূপ দোল উৎসবে রঙে মাতলো তরুণ-তরুণী/ছবি: দীপু মালাকার

ঢাকা: ফাল্গুনের শেষ লগ্নে এসে রঙে মাতলো শহরবাসী। আনন্দ আর উৎসবে পরস্পরকে রঙে রাঙানো এ অঞ্চলের সংস্কৃতিতে আগেও দেখা গেছে। বিয়ে বাড়িতে বা খেলার জয়ে রং ছিঁটানো ছিলো উৎসবের বহিঃপ্রকাশ, যা এখন আর খুব বেশি দেখা যায় না। তাই, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এ উৎসবটিকে কেন্দ্র করে রং নিয়ে খেলার সুযোগকে বেশ ঘটা করেই গ্রহণ করেছে তরুণ-তরুণীরা। যার মধ্যে দেখা যায়, এক সার্বজনীন উৎসবের রূপ।

গত কয়েকদিন ধরেই দেশের বিভিন্নস্থানে উৎবের আমেজে উদযাপিত হচ্ছে হোলি। আবিরে মাখামাখি হচ্ছে মুখগুলো।

রঙেরও রয়েছে বৈচিত্র্য। উজ্জ্বল আর মনোহর রঙের মধ্যদিয়ে অশুভকে পেছনে ঠেলে নতুন দিনের দিকেই এগিয়ে যায় প্রজন্ম।
দোল উৎসবে রঙে মাতলো তরুণ-তরুণী/ছবি: দীপু মালাকারহিন্দু্ ধর্ম মতে দোল ও হোলির চরিত্র আলাদা হলেও এ বঙ্গে এসে সেটি এক হয়ে গিয়েছে। মূলত পুরান ঢাকার শাখারীবাজার এলাকাই হলো হোলি উৎসবের প্রাণকেন্দ্র। এখানে হোলিকে কেন্দ্র করে রোববার (১২ মার্চ) সারাদিন ধরেই চলে উৎসবের আমেজ। আবিরে রঙিন হয়ে ওঠে দোলযাত্রা। ছেলে-বুড়ো সবাই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হোলিতে মাতেন। অনেকেরই চেহারা চেনা যাচ্ছে না। যেন মুখের ওপর বাহারি রঙের আরেকটি আচ্ছাদন পড়েছে।
দোল উৎসবে রঙে মাতলো তরুণ-তরুণী/ছবি: দীপু মালাকারহোলি উৎসবে যেহেতু রং মুখ্য আর তাই এ দিনের পোশাকও হতে হবে সাদা। সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ে (ঢাবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটে হোলি উৎসবের আমেজ। নিজেদের মধ্যে রং ছুড়ে একে-অপরকে উৎসবের সঙ্গী করে নিচ্ছেন সহপাঠী আর বন্ধুরা।
দোল উৎসবে রঙে মাতলো তরুণ-তরুণী/ছবি: দীপু মালাকারপেইন্টিং বিভাগেরর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত বাংলানিউজকে বলেন, হোলি উৎসব হিন্দু ধর্মের দেবতা শ্রীকৃষ্ণের সর্ম্পক রয়েছে। তবে আমাদের এখানে হোলি উৎসব মানে নিছক আনন্দ। এ রং মনকে রাঙিয়ে তোলে। আমাদের জীবনে একটি আনন্দময় দিন এটি।
দোল উৎসবে রঙে মাতলো তরুণ-তরুণী/ছবি: দীপু মালাকারশিক্ষার্থী দীপ্তি বলেন, চারুকলার হোলি উৎসবে আবিরের ব্যবহার বেশি। মূলত বন্ধুরাই একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাই, দিনটি আনন্দের হয়। এখানে তরল রং ব্যবহার হয় না। এ উৎসবের সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে আনন্দের ভাগ দেওয়া যায় অন্যকে।
দোল উৎসবে রঙে মাতলো তরুণ-তরুণী/ছবি: দীপু মালাকারচারুকলা ইনস্টিটিউটে দেখা যায়, অনেকেই সাদা টি-শার্ট এবং সাদা শাড়ি পড়ে এসেছেন। দোলের রংয়ে সাদা পোশাক হয়ে ওঠে আরো রঙিন। আর বর্তমান প্রজন্মের কাছে ছবি তোলার জন্য কাপড়কে রাঙানো অত্যাবশক। কারণ সাদা ক্যানভাস রঙিন না হয়ে উঠলে ছবিতে যে মলিনই দেখাবে।
দোল উৎসবে রঙে মাতলো তরুণ-তরুণী/ছবি: দীপু মালাকারবিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকেও অনেকেই এসেছেন এ উৎসবে যোগ দিতে। নিজ থেকেই কিছুটা রং মুখে মাখিয়ে ছবি তুলছেন। ইনস্টিটিউটের স্থাপত্য বিভাগের সামনে রং লাগেনি এমন মুখ খুঁজে পাওয়া যাবে না। অনেকেই বন্ধুদের জোর করে রং মাখিয়ে দিচ্ছেন। এরপর সকলে হেসে গড়াগড়ি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতি বছরই হোলি উৎসবে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ছে। ফাল্গুনকে বিদায় জানানোর দিনটিকে সার্বজনীন হিসেবেই নিচ্ছে মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৭
এমএন/ওএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।