১৯৯৯ সালে তৎকালীন দিনাজপুর পৌর বিএনপি সভাপতি ও প্রয়াত মন্ত্রী খুরশীদ জাহান হক চকলেট অনুসারি ফরহাদ হোসেন চৌধুরী পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দেওয়াল ঘড়ি মার্কায় নির্বাচন করে হেরে যান। নির্বাচনে হারার পর থেকে আস্তে আস্তে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে সরে যেতে থাকেন তিনি।
দিনাজপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ফরহাদ হোসেন চৌধুরী ২০০৯ সালে রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। চুল ও দাড়ি রেখে নেন পীরের সাজ। ২০১০ সালে বোচাগঞ্জ উপজেলায় তার গ্রামের বাড়ি ফকিরপাড়া দৌলা গ্রামে কাদেরিয়া মোহাম্মদিয়া দরবার শরীফ প্রতিষ্ঠা করেন ফরহাদ চৌধুরী। ভিড় জমতে থাকে তার দরবারে। বাড়তে থাকে মুরিদ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মালেক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দরবার শরীফ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রূপালীকে পালিত মেয়ে হিসেবে নেন ফরহাদ চৌধুরী। রূপালী তার দরবার শরীফের দেখভাল করতেন।
তিনি জানান, অসংখ্য মুরিদ নিয়ে ফরহাদ হোসেন চৌধুরী তার দরবারে প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে দুই ঘণ্টা জিকির ও ধর্মীয় আলোচনা করতেন। গত বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সিরাজগঞ্জ থেকে এসে মুরিদ হওয়া সিরাজুলের সঙ্গে পালিত মেয়ে রূপালীর বিয়ে দেন ফরহাদ হোসেন চৌধুরী। বিয়ের তিনদিন পর তারা দু’জনেই খুন হন।
ঘটনার দিন সন্ধ্যা থেকে মোটরসাইকেলে কয়েকজন যুবক দরবারের আশপাশে মহড়া দেয়।
অন্যান্য দিনের চেয়ে ওইদিন দরবারে ঘণ্টা খানেক আগেই আসেন ফরহাদ চৌধুরী। পরে মুরিদরা জিকিরের জন্য গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে পুলিশে খবর দেয়। এ ঘটনার পর রুপালীর স্বামী সিরাজুল নিখোঁজ রয়েছে।
বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মোহাম্মদ সাজ্জাদ বাংলানিউজকে বলেন, এই হত্যার ঘটনায় কোন জঙ্গি গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতা আছে, নাকি এটা পূর্ব শত্রুতার জের তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে এ ঘটনায় এরই মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খুঁজছে রূপালীর স্বামী সিরাজকেও।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের (দিমেক) ফরেনসিক বিভাগের ডা: আমীর উদ্দিন বাংলা নিউজকে বলেন, গুলির আঘাতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
জেডএম/