এখনও অগ্নিকাণ্ডস্থলের পুরো এলাকাজুড়ে থেমে থেমে বের হচ্ছে ধোঁয়ার কুণ্ডলি। পোড়া গন্ধে ভারি হয়ে উঠেছে বস্তির পরিবেশ।
বস্তির বউবাজার থেকে জামাই বাজার ও আরেকপাশে বউবাজার থেকে বাদলের নৌকাঘাট পর্যন্ত পুড়ে ছাই হয়েছে সব ঘর। স্থানীয়রা বলছেন, এ বস্তিতে যতোবার আগুন লেগেছে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল এবারের আগুন। এবার ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
আগুনে সব হারানো মানুষগুলো ধ্বংসস্তুপের পাশে দাঁড়িয়ে দেখছেন পুড়ে যাওয়া স্বপ্নগুলোর ছাই। পোড়া টিন, ইটের ধ্বংসস্তুপ উল্টেপাল্টে দেখছেন অবশিষ্ট কিছু আছে কিনা।
মো. আলমগীর নামে একজন দাঁড়িয়ে আছেন নিজের পুড়ে যাওয়া মুদি দোকানের পাশে। তিনি জানান, আগুনে তার দুইতলা বাড়ি ও দোকানের সব শেষ হয়ে গেছে।
যখন আগুন লাগে তখন ঘুমিয়ে ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৌনে তিনটার দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘরের পেছনে আগুন। কোনোমতে স্ত্রী ও মেয়েডারে নিয়া বাইর হইছি। কিছু নিয়া বাইর হইতে পারিনাই। দৌড় দিয়া বের হইয়া দেখি চোখের পলকে আগুন ছড়ায়া গেলো। আস্তে আস্তে আগুন সামনে আগাইল আর আমরা পেছনের দিকে গেলাম।
প্রতিদিন রাত তিনটা চারটার সময় ঘুমাই, কাল ঘুমাই গেছি একটায়। না ঘুমাইলে হয়তো কিছু নিয়া বাইর হইতে পারতাম। দোকানের ক্যাশে ও ঘরের নগদ টাকাটা নিয়া বের হইতে পারিনাই। তিনি বলেন, এবার সবচেয়ে ভয়াবহ আগুন। আগুনে দেড় থেকে দুই হাজার ঘর পুইড়া গেছে এবার।
বাতাসের কারণে দ্রুত পুরো এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে উল্লেখ করে এলাকার বাসিন্দা রাসেল বলেন, একদিক থেকে আরেকদিকে নিমিষের মধ্যে আগুন ছড়াইয়া গেলো। আগুনটা বাদলের নৌকা ঘাটের কাছে একটা বাড়ির দোতলায় লাগে। তারপর বউবাজারের দিকে আসে, নিমিষেই মধ্য জামাইবাজার এলাকায় চলে যায়।
অপর এক বাসিন্দা শামীম বলেন, সবাই কোনোমতে এককাপড়ে বের হইতে পারছি, কিছু নিয়া বের হইতে পারিনাই। মোবাইলগুলাও নিতে টাইম পাইনাই। সব পুইড়া ছাই হইয়া গেছে।
বুধবার (১৫ মার্চ) দিবাগত রাত ২টা ৫০ মিনিটে কড়াইল বস্তির বউবাজারের বড় মসজিদ সংলগ্ন দোতলা একটি বাসায় আগুনের সূত্রপাত।
ফায়াস সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের কর্মীদের পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় মধ্যরাতে লাগা ভয়াবহ এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকাল পৌনে ৮টায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
পিএম/জেডএস
**কড়াইল বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে
** কড়াইল বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণের পথে
** মধ্যরাতের আগুন ভোরেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি
** কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ আগুন, কাজ করছে ১৮ ইউনিট