আর্তনাদ করে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন লালবাগের প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মরিয়ম বেগম।
স্বামী, সন্তানহারা মরিয়ম বেগমের জীবনযাপনের একমাত্র সম্বল ছিল কারখানাটি।
লালবাগের প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে শুধু মরিয়ম বেগমেরই কপাল পোড়েনি। তার সঙ্গে কপাল পুড়েছে আরও ১৫-২০ জন কারখানা মালিকের।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকাল ৬টায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে রাজধানীর লালাবাগের লিলি মার্কেটের পেছনে জুলাপট্টিতে অবস্থিত প্লাস্টিক কারখানায়। এ ঘটনায় প্রায় ২০টি প্লাস্টিক তৈরির কারখানা পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট প্রায় একঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
মো. হোসেন ৫ বছর আগে এখানে প্লাস্টিকের একটি ছোট কারখানা দিয়েছিলেন। এ কারখানার আয় দিয়ে চলতো তার পরিবারে ও ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচ। কিন্তু, আজ সেই সম্বলও নেই, আগুনে পুড়ে ছাই।
মো. হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মাল ডেলিভারি দিমু দেখে গতকাল (বুধবার) রাতে কারখানা বোঝাই করে ২ লাখ টাকার কাঁচামাল উঠাইছিলাম। কিন্তু আজ সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমি এহন কি করমু। দেনা কইরা এ কাঁচামাল কিনছিলাম। ভাবছিলাম মাল ডেলিভারি দিয়া টাকা পাইলে পরিশোধ করমু। এখন আমি রাস্তার ফকির। পরিবার নিয়ে এহন আমি কেমনে চলমু।
আরেক কারখানা মালিক মো. শাহদাত বাংলানিউজকে বলেন, সকালে নামাজ পইড়া আমি কারখানা দিইখা গেছি, তহনো কোনো সমস্যা ছিলো না। কিন্তু বাসায় যাওয়ার ৫ মিনিট পড়ে শুনি আগুন লাগছে। আইসা দেখি আমার জীবনের সব শেষ। এহন আমরা কীভাবে বাঁচমু।
তিনি বলেন, এখানে যাদের কারখানা ছিলো আমরা সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। সবারই চলার মতো একটি সম্বল ছিলো, কিন্তু এখন সবাই ফকির।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৫০ লাখ টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঢাকা দক্ষিণের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মো. হালিম জানান, কারখানাগুলোতে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক তৈরির কাঁচামাল থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
এমএ/ওএইচ/জেডএস