মালপত্র সরাবো, নাকি জীবন নিয়ে সরে যাবো, কিছুই ভাবতে পারছিলাম না। দোকানে তখনও লক্ষাধিক টাকার চাল, ডাল, তেল, সাবান, বিস্কুট, গুঁড়ো দুধসহ নানা খাদ্যদ্রব্য।
একটু দম নিয়ে কড়াইল বস্তির বাসিন্দা সেলিম মিয়া বলতে থাকেন, এক দিকে আগুন, সঙ্গে বাতাস। যে কারণে দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পরে আগুন। সে আগুনে পুড়ে গেলো আমার দোকানের ৪৫ বস্তা চাল, মসুরের ডাল, সাবান, বিস্কুট, কয়েক ড্রাম সয়াবিন তেল।
পোড়া দোকানে দাঁড়িয়ে সেলিম মিয়া বলেন, আগুন দেখে শহীদ হয়ে গেছি। দোকানে অনেক টাকার মাল ছিলো। যে কারণে আমি সব সময় দোকানেই ঘুমাই। আগুন আমার সব নিয়ে গেছে, আমারে কেন নিলো না। আমি এহন কি করবো!
সেলিমের পাশে দোকান জহুরা বেগমের। পোড়া দোকানের টিন আর বস্তা দেখিয়ে বলেন, আগুন দেইখ্যা দুই বস্তা চাল সরাইছি। একটু পরে দেখি ওইখানেও আগুন। পরে সব ফালাই জান (জীবন) নিয়ে চলে যাই। এখন আইসা দেহি সব শ্যাষ। আমার ব্যাংকের কাগজ, আইডি কার্ড সব পুড়ে গেছে। আমি কিভাবে চলবো।
সেলিম, জহুরাদের মতো কয়েক শ’ দোকান ও বসতবাড়ি পুড়ে হয়ে গেছে। চালের টিন, খুঁটি, টিভি, ফ্রিজ কোন কিছুই বাদ পড়েনি আগুনের লেলিহান শিখা থেকে। গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ড ঘটায় ক্ষতির পরিমাণ বেশিই।
ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো অগ্নিকাণ্ডস্থলের পুরো এলাকাজুড়ে থেমে থেমে বের হচ্ছে ধোঁয়ার কুণ্ডলি। পোড়া গন্ধে ভারি হয়ে উঠেছে বস্তির পরিবেশ। বস্তির বউবাজার থেকে জামাই বাজার ও আরেকপাশে বাদলের নৌকাঘাট পর্যন্ত পুড়ে ছাই সব ঘর।
বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
এসএম/জেডএম