এভাবে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন মোড়ে ‘দাঁড়ালেই দণ্ড’ লেখা সাইনবোর্ড সাঁটিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। তবে পুলিশের সেসব নির্দেশনার থোড়াই পরোয়া করেন চালকরা।
আর দাঁড়ালেই দণ্ড সাইনবোর্ডে নির্দেশনা জানিয়েই দায়িত্ব শেষ ট্রাফিক বিভাগের। দণ্ড দিয়ে নির্দেশনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ দেখা যায় না কোথাও। বুধবার নগরীর মিরপুর ১০, শ্যামলী, শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, নতুন বাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
শাহবাগ মোড়ে ফার্মগেটমুখী রাস্তার শুরুতেই সাইনবোর্ডটি চোখে পড়ে সহজেই। সাইনবোর্ডটিতে লেখা ‘এখানে বাস দাঁড়ানো নিষেধ, দাঁড়ালেই দণ্ড’। অথচ মতিঝিল থেকে আসা ফার্মগেটগামী বাসগুলো ডানে মোড় নিয়েই থামছে রাস্তার শুরুতে। সিগন্যাল পার হয়ে এখানে বাসগুলোতে যাত্রী উঠানামার কারণে সহজেই তৈরি হচ্ছে জটলা। যার ফলে অন্যান্য যানবাহন আটকে যাচ্ছে সিগন্যালের মাঝেই।
বুধবার বিকেলে ওই মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ একবার সিগন্যালে গিয়ে গাড়ি চলাচলের নির্দেশনা দিচ্ছেন, পরেই আবার দৌড়ে এসে এসব গাড়ি সরাতে দেখা গেছে। বার বার এভাবে আসা যাওয়ায় বিরক্তি থেকে গালাগালি করতেও শোনা গেলো তাকে।
কারওয়ানবাজার সিগন্যালে ফার্মগেটমুখী রাস্তার শুরুতে বেশ বড় করে লেখা ‘বাস থামিবে না, দাঁড়ালেই দণ্ড’। সিগন্যাল ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসগুলো সেই সাইনবোর্ডের সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে আর বাস শ্রমিকদের হাঁকডাক শুরু হচ্ছে। বেশ সময় নিয়ে রাস্তার মাঝখানেই সিগন্যালের মধ্যে যাত্রী উঠাতে দেখা গেছে সেসব বাসে।
এখানে দাঁড়ানো নিষেধ, তারপরেও দাঁড়িয়েছে কেনো জানতে চাইলে নিউ ভিশন বাসের চালক শরীফ বলেন, দেখেন না বাস আসার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে, বাস না থামাইয়া উপায় আছে? আর যারা নামব, তাদের নামাইতে তো বাস থামানো লাগে।
ওই সিগন্যালে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, প্রায়ই এসব বিষয়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে অনেক চালককে জরিমানাও করা হয়। যখন অভিযান চলে তখন ঠিক, আর অন্যসময় সেই একই অবস্থা। সব সময়তো আর এসব খেয়াল করা সম্ভব হয় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) প্রবীর কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, সচেতন না হলে জোর করে কত নির্দেশনা মানানো যায়? সবসময় অভিযান চালানোর মত সক্ষমতাও আমাদের নেই। অভিযান চালানোর পাশাপাশি এসব মেনে চলতে বিভিন্ন প্রচারণা চালানো হচ্ছে আমাদের পক্ষ থেকে।
যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানোর বিষয়ে গাড়ি চালকদের পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হতে হবে উল্লেখ করে ট্রাফিকের উর্দ্ধতন এই কর্মকর্তা বলেন, যাত্রীরা যেখানে সেখানে গাড়িতে উঠতে চায়, নামতে চায়। এ অভ্যাস থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। যত্রতত্র উঠানামা করলে যানজটের পাশাপাশি ঝুঁকিও বেড়ে যায়- এ বিষয়ে আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
পিএম/জেডএম