ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভোগান্তির শেষ নেই রামপুরা-মৌচাক-মালিবাগে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৭
ভোগান্তির শেষ নেই রামপুরা-মৌচাক-মালিবাগে ভোগান্তির শেষ নেই রামপুরা-মৌচাক-মালিবাগ সড়ক-ছবি:কাশেম হারুন

ঢাকা: রাস্তার এক পাশ দিয়ে খালের মতো বইছে ড্রেনেজের দ‍ুর্গন্ধযুক্ত পানি। পানিতে ভাসছে নানা ‍ময়লা, ছড়াচ্ছে উ‍ৎকট গন্ধ। অন্য অংশে গাড়ি চলাচল করলেও উড়ছে ধুলা-বালি। নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের ওপর থেকেও পড়ছে বালি, সিমেন্ট ও রডের টুকরোসহ ময়লা।

রাজধানীর রামপুরা থেকে মৌচাক-মালিবাগ হয়ে শান্তিনগর এলাকার রাস্তার দুর্ভোগের এ চিত্র এখন নিত্যদিনের।

মালিবাগ রেলগেট এলাকার ফার্মেসির মালিক আলাওল বাংলানিউজকে বলেন, ‘ফ্লাইওভারের কাজের কারণে প্রায় তিন বছর ধরে রাস্তাটি এমনিতেই খারাপ।

এর ওপরে মাস ছয়েক আগে খোঁড়াখুঁড়ি শেষে রাস্তাটি আর ঠিক করা হয়নি। ফলে পানি জমে বড় বড় গর্ত হয়েছে। গর্তে প্রতিনিয়তই পড়ছে রিকশা, প্রাইভেটকার, ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস। ইতোমধ্যেই রিকশা উল্টে অনেক স্কুলগামী শিশু ও নারী-পুরুষেরা গর্তের পানিতে পড়েছেন। ভোগান্তির শেষ নেই রামপুরা-মৌচাক-মালিবাগ সড়কে-ছবি:কাশেম হারুনতিনি বলেন, যে গাড়িগুলো একবার এ রাস্তা দিয়ে আসে, পরের বার আর আসে না। কিন্তু আমরা যারা এ এলাকায় বসবাস করি, তাদের প্রতিনিয়তই এসব ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। আমরা কোথায় যাবো? দ্রুত এ দুর্ভোগের অবসান চাই’।
 
মালিবাগ বাগানবাড়ির বাসিন্দা রিপা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাস্তা খুবই খারাপ, প্রচণ্ড খারাপ। রিকশায় যাওয়া যায় না। পানির নিচে বড় বড় গর্ত রয়েছে, গর্তে রিকশা উল্টে যায়। দুর্গন্ধময় ময়লা পানিতে ভরা রাস্তায় রয়েছে ক‍াদাও। হাঁটু পর্যন্ত কাপড় তুলে চলতে হয়। ৫-১০ মিনিটের পথ হেঁটে যেতে সময় লাগে আধা ঘণ্টা’।

আক্ষেপ করে ফরচুন শপিংমলের নিরাপত্তাকর্মী জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ রাস্তায় চলতে অন্যদের দুর্গন্ধ নাকে এলে বা কষ্ট হলে অন্য রাস্তা দিয়ে যান। কিন্তু আমরা কোথায় যাবো?’

শপিংমলের কাপড়ের দোক‍ানদার পিন্টু মণ্ডল বলেন, ‘আমার বাসা পেছনের বিল্ডিংয়ে। মেয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। তাই ঝড়, বৃষ্টি-বাদল যাই হোক, এ রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করতেই হয়। রাস্তায় যানবাহন চলে না। রিকশাচালকরাও আসেন না’। ভোগান্তির শেষ নেই রামপুরা-মৌচাক-মালিবাগ সড়ক-ছবি:কাশেম হারুন সরেজমিনে দেখা গেছে, রামপুরা থেকে মৌচাক-মালিবাগ হয়ে শান্তিনগরের রাস্তার পশ্চিম অংশে ড্রেনেজের দ‍ুর্গন্ধযুক্ত পানি বয়ে চলেছে। পানিতে ভাসছে নানা ‍ময়লা, ছড়াচ্ছে উৎকট গন্ধ। দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা পানির নিচে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। দুর্গন্ধে নাক চেপে রাস্তায় ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে চলাচল করছেন মানুষজন। চারলেনের সড়কের দু’লেনে পানি জমে আছে, আর একলেন পরিমাণ জায়গায় চলছে ফ্লাইওভারের কাজ। সবমিলিয়ে সড়কের চারভাগের তিনভাগই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে অ‍াছে দীর্ঘদিন ধরে।

এসব কারণে রাস্তাটির পরিবর্তে সদরঘাট-গুলিস্তান থেকে শান্তিনগর-মালিবাগ-মৌচাক-রামপুরাগামী যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো রাজারবাগ ও খিলগাঁও ফ্লাইওভার হয়ে রামপুরার আবুল হোটেলের রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করছে। ভোগান্তির শেষ নেই রামপুরা-মৌচাক-মালিবাগ সড়ক-ছবি:কাশেম হারুনঅন্যদিকে রাস্তার পূর্ব অংশে যানবাহন কিছুটা চললেও ঝড়ের গতিতে উড়ছে ধুলা-বালি। সব সময় লেগে থাকছে দীর্ঘ যানজটও। যানজটে বসে থাকা যাত্রী ও চলাচলকারীরা ধুলা-বালিতে নাকাল হচ্ছেন। তার ওপরে ফ্লাইওভারের কাজ চলতে থাকায় ওপর থেকে বালি, সিমেন্ট ও রডের অংশবিশেষ পড়ছে তাদের শরীরে। পাশাপাশি শব্দ দূষণের শিকার হতে হচ্ছে।

শনির আ‍ঁখড়া থেকে আসা সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী নিয়াজ মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাস্তার কাদা-পানি, যানজট, ইচ্ছামতো গাড়ি থামানোর পাশাপাশি ফ্লাইওভারের কাজের কারণে এ রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছে না। ময়লা জামা পরে কলেজে ক্লাস করতে হয়’।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১০ ঘণ্টা,  মার্চ ১৮, ২০১৭
এমএফআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।