একটু কাছে গিয়ে জানতে চাইলে সুরত আলী বাংলানিউজকে বলেন, ভাই, যে পরীক্ষা সদর হাসপাতালে করালে লাগে ১২০০ টাকা। সেই পরীক্ষা এখানে ২৫০০ টাকা।
কিন্তু সদর হাসপাতালে পরীক্ষা করালেন না কেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সদর হাসপাতালের মেশিন নষ্ট। তাই ডাক্তার সাহেব বাইরে থেকে পরীক্ষাগুলো করাতে বলেছেন। কিন্তু এতো টাকা পাবো কোথায়।
সুরত আলীর কথার সূত্র ধরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে এই হাসপাতালের ইটিটি মেশিন দু’টি। প্রায় একই সময় ধরে নষ্ট ইকো কার্ডিওগ্রাম দু’টিও।
এছাড়া চারটি আল্ট্রাসনো মেশিনের মধ্যে তিনটি, ১৮টি সাকার মেশিনের মধ্যে ১৩টি, ছয়টি ইসিজি মেশিনের মধ্যে তিনটি, পাঁচটি আনেসথেশিয়া মেশিনের মধ্যে চারটি, চারটি কার্ডিয়াক মনিটরের মধ্যে দু’টি, ছয়টি এক্স-রে মেশিনের মধ্যে চারটি, তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের একটি, সিসিইউ এর চারটি এসির মধ্যে দু’টি ও বিদ্যমান একটি বায়ো কেমিস্ট অ্যানালাইজার দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
আর এভাবেই দীর্ঘদিন মেরামতের অভাবে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম।
এতে বাইরে থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে এক দিকে যেমন সাধারণ রোগীদের দুই থেকে তিনগুণ বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে, তেমনি সংশ্লিষ্টদের অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে সরকারি সম্পদ।
এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি আনিছুর রহিম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণ মানুষকে পায়ে পায়ে হয়রানি ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অথচ কর্তৃপক্ষ একটু আন্তরিক হলে চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো এতো দিন নষ্ট হয়ে পড়ে থাকতো না। সাধারণ মানুষকেও হয়রানি-দুর্ভোগের পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হতো না।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. তহিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমি ১৩ মার্চ এখানে যোগদান করেছি। এসেই জানার চেষ্টা করেছি কোথায় কি সমস্যা রয়েছে। চলতি মাসেই এসব সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হবো। আশা করি স্বাস্থ্যসেবায় সাতক্ষীরা এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৭
এসআই