গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক বাংলানিউজকে জানান, হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিকদের নিয়ে ডিএমপির গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) কার্যালয়ে বৈঠক চলছে। বৈঠকের পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানানো হবে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শনিবার গুলশান এলাকার বেশ কয়েকটি হোটেল-রেস্টুরেন্টে গিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ। এসময় হোটেলগুলোর পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা, হোটেলে প্রবেশ পথ, হোটেলের অবস্থান এবং হোটেলে কারা কারা অবস্থান করেন, তার তথ্য সংগ্রহ করেছে তারা।
পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, উত্তরায় র্যাবের ক্যাম্পের সামনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন পরিকল্পনায় যাচ্ছেন। আর এতে গুলশান-বনানী এলাকার হোটেলগুলোর ওপর নজরদারি ও পুলিশি নিরাপত্তার বিষয়টি বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ চাইছে সবগুলো হোটেল-রেস্টুরেন্টের সামনে আর্চওয়ে (নিরাপত্তামূলক তোরণ), সিসিটিভি ক্যামেরা এবং বিমানবন্দরের মতো ব্যাগ-ব্যাগেজ চেক করার আধুনিক যন্ত্রপাতি বসানো থাকবে। কিন্তু হোটেলগুলো এসব ব্যবস্থা নিতে রাজি হলেও রেস্টুরেন্ট মালিকরা স্বল্প জায়গার মধ্যে এতো কিছু কীভাবে স্থাপন করা যাবে- তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে উঠছেন।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) আশকোনায় র্যাব ক্যাম্পে জঙ্গি হামলার ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর বনানী ১১ নম্বর সড়কের বনক্যাফে ও ইউভেরিস নামের একটি ক্যাফেতে গিয়ে পুলিশ আর্চওয়ে ও বিমানবন্দরের মতো চেকিং যন্ত্রপাতি লাগতে নির্দেশ দিয়ে আসে। ওইসময় হোটেল থেকে পুলিশ রেস্টুরেন্টে খেতে বসা লোকদের উঠিয়ে দেয়। ওই ক্যাফের মালিক আমবেরিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ক্যাফেতে আর্চওয়ে লাগাচ্ছি, কিন্তু বিমানবন্দরের মতো চেকিং যন্ত্রপাতিগুলো যদি বসাতে হয় তাহলে এর জায়গা কোথায়?
ক্যাফেতে আসা একজন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নিজেদের মতো করে হোটেল-ক্যাফেতে বসে খেতে চাই। এখন আমাদের সিসিটিভিতে নজরদারি করা হবে বা এতো নিরাপত্তা ঝামেলার মধ্যে আরাম করে বসা যায় না।
পাশের আরেকজন রেস্টুরেন্ট মালিক জানান, হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা ঘটনা পর তাদের ক্যাফের ব্যবসা লাভের দিক দিয়ে শূন্যের কোঠায় নেমেছিলো। এরপর সিটি করপোরেশনের রাস্তা মেরামত কাজের জন্য ছয় মাসের বেশি সময় রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় মন্দা গেছে। তখন কেউ রেস্টুরেন্টে এসে ঢুকতে রাস্তা খুঁজে পেতো না। এখন আবার নিরাপত্তা ঝামেলার ‘বাড়াবাড়িতে’ তাদের ব্যবসা করাটা কঠিন হয়ে গেলো।
গুলশানে কর্মরত পুলিশের বিশেষ শাখার একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, গুলশান বনানীতে এখন পুলিশের চেকপোস্টগুলোতে কড়া তল্লাশি চলবে। তৎপরতা বাড়বে পুলিশের। তবে নতুন করে কোথাও চেকপোস্ট বসানো হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৭
এসএ/এইচএ/