ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বাইরের প্রতিক্রিয়ার পরই গণহত্যা দিবসের কর্মপন্থা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৩ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
বাইরের প্রতিক্রিয়ার পরই গণহত্যা দিবসের কর্মপন্থা বাইরের প্রতিক্রিয়ার পরই গণহত্যা দিবসের কর্মপন্থা

একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসজুড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তার স্মরণে এরই মধ্যে ২৫ মার্চকে গণহত্যা হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এবার সামনে আছে গণহত্যা দিবস হিসেবে ২৫ মার্চের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের প্রশ্নটি। এজন্য কোথা থেকে কী করতে হবে, ‍সেই কর্মপন্থাও আলোচনা করে ঠিক করা হবে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে প্রাথমিক ধারণা দেবার পর তাদের তরফ থেকে যে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে তার ভিত্তিতে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বাংলানিউজকে এই অভিমত জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ২৫ মার্চকে আমরা গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করবো।

সেরকম একটা পরিবেশ হাসিনা সরকারের আমলে তৈরি হয়েছে। গণহত্যা চলেছে পুরো ৯ মাসব্যাপী। ৯ মাসের ঘটনা প্রবাহকে একটা দিবসে, একটি নিদিষ্ট দিনে স্মরণ করার জন্যই ২৫ মার্চকে বেছে নিয়েছি আমরা। কেননা ২৫ মার্চের কালো রাতেই পাকিস্তানি বাহিনি বাঙালি নিধনযজ্ঞটি শুরু করে।

তিনি বলেন, গত ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের এই প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। সেই সঙ্গে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোগুলোর স্বীকৃতি আদায় করার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়েছে। এ-দায়িত্বটি অবশ্যই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পালন করবে। এটা অনেক দিনের দাবি। যুদ্ধাপরাধের বিচার করতে যেমন সব বাঙালি একাট্টা, ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রশ্নে বা প্রস্তাবেও সকল দেশপ্রেমিক বাংলাদেশির অভিন্ন অবস্থান। সিদ্ধান্তটা এটা এমন একটা সময়ে হয়েছে(১১ মার্চ) যে, ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের জন্য মাঝখানের সময়টি খুব সংক্ষিপ্ত। এ সময়ের মধ্যে আমরা যতটুকু পারি করবো। আমরা বিদেশে আমাদের মিশনগুলোকে তৎপর ও সক্রিয় করব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দিষ্ট কিছু কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। মিশনগুলোর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোকে এবং জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ২৫ মার্চের হত্যাযজ্ঞ সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হবে। তারপরে আসে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কোথা থেকে কী করতে হবে ‍সেই কর্মপন্থা। সেটা আমরা আলোচনা করে ঠিক করবো জাতিসংঘ ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর তরফ থেকে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া পাবার পর। মানে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। তাছাড়া গণহত্যার মতো বিষয় নিয়ে কাজ করার মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্ট্রাকচারাল অরগ্যানাইজেশনও আছে। এরকম কিছু সংস্থাকে আমরা এরই মধ্যে শনাক্তও করেছি।

তবে এ বিষয়ে প্রচার-প্রচারণা বা অ্যাডভোকেসির জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই যথেষ্ট বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, বিশ্বের সব প্রান্তেই আমরা যেতে পারি। ৬৫টি দেশে আমাদের মিশন রয়েছে। এটা করার জন্য আমরা স্বাগত জানাব এসব বিষয় নিয়ে যারা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছেন তাদের। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে যারা এ নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন, যারা গণহত্যার জন্য পাকিস্তানি বাহিনি ও তাদের এদেশীয় দোসরদের শাস্তির দাবি তুলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ ও এর  ইতিহাস নিয়ে যারা কাজ করেছেন এবং সেই সঙ্গে তরুণ প্রজন্ম এবং যারা মুক্তিযোদ্ধা-পরিবারের সন্তান তাদের। এদের সবার  ক্যাপাসিটি বা আইডিয়াগুলোকে নিয়ে একাজে আমরা অগ্রসর হতে পারি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, কর্মপন্থাগুলোকে জোরালো আকার দিতে, গুছিয়ে আনতে আমাদের কিছুটা সময় লাগবে। বেশ শ্রম দিতে হবে, গবেষণা করতে হবে। তবে আগামী ২৫ মার্চকে সামনে রেখে কিছু প্রাথমিক কাজ আমরা এরই মধ্যে সেরে ফেলতে চাই। এটা একটা নতুন কাজ আমাদের জন্য। এটা আমাদের মধ্যে নতুন এক উদ্দীপনারও সঞ্চার করেছে। নতুন আবেগ ও দায়িত্ববোধেরও জন্ম দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় গৃহীত হয়েছে ২০ মার্চ সোমবার। একই সঙ্গে এ দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঐ বৈঠকে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে ঘোষণার বিষয়টিও সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে।

আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালনের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। জাতিসংঘে এ সংক্রান্ত একটি সংস্থাও আছে। প্রস্তাবটি মূলত তাদের কাছেই পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০৯ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
কেজেড/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।