এমন পরিস্থিতির মধ্যেই প্যারাকমান্ডো ও সোয়াট সদস্যদের ঘিরে রাখা ‘আতিয়া মহল’ এর বাড়ি থেকে রাত সোয়া ১১টায় ভেসে আসে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ। এর ৩০ মিনিট পরেই শোনা যায় ১৫ থেকে ২০ রাউন্ড গুলির শব্দ।
এর আগে রাত নয়টার দিকে যখন নানা গলি ঘুপচি পেরিয়ে ঘটনাস্থলের কাছে শিববাড়ি পয়েন্টে গিয়ে দাঁড়ালাম, তখন সেখানে পুলিশের সতর্ক পাহারা চৌকি। রাতের অন্ধকারে নজরদারির জন্য পুলিশ সদদস্যরা টর্চ লাইটের আলো ফেলছিলেন পাশের বাড়ির দেয়াল থেকে শুরু করে চারপাশে। কাছেই বড় রাস্তার ওপর সেনা, পুলিশের গাড়ি বহর ও এপিসি। দূরেই অন্ধকারের বুক চিরে দাড়িয়ে আছে জঙ্গি আস্তানা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ‘আতিয়া মহল’। যদিও এ ভবনের চারপাশে জেনারেটর চালিয়ে রেখে আলোকিত করা হয়েছে।
এ চেকপোস্টসহ ঘটনাস্থলের চারপাশের সবগুলো নজরদারি চৌকিতে নজরদারি করছেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানালেন, এ এলাকাটিও ঘটনাস্থলের গুলির রেঞ্জের মধ্যে। তাই, আগের সন্ধ্যার বিস্ফোরণের অভিজ্ঞতার আলোকে আজ সন্ধ্যার পর মিডিয়াসহ সকলকে কর্ডন এরিয়ার বাইরে বের করে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ সানি বাংলানিউজকে জানান, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা চরম অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলতে পারছেন না, প্রয়োজনীয় কাজে বাড়ির বাইরে যেতে পারছেন না, আবার যারা বাইরে ছিলেন তারাও ঘরে ফিরতে পারছেন না।
অন্য এক বাসিন্দা জানালেন, প্রয়োজন মেটানোর অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় ও ঘটনার পরম্পরায় হতবিহব্বল হয়ে অনেকেই এলাকা ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে চলে গেছে।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) ভোরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শিববাড়ি এলাকায় আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানার খবর পেয়ে অভিযান চালায় অাইন-শৃঙ্খলাবাহিনী। এরপর থেকেই প্রথমে বাড়ি এবং পরে পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়। জঙ্গিদের আটক এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে শনিবার সকাল থেকে শুরু হয় অপারেশন টোয়ালাইট। শনিবার সন্ধ্যায় দু’দফা বোমা বিস্ফোরণে ২ পুলিশসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাংবাদিক, পুলিশ ও র্যাব সদস্যসহ ৩২ জন।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৭
আরএম/ওএইচ/