বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বরিশাল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনা ঘিরে সিসি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। নগরের ৩০টি ওয়ার্ডে ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৬১টি সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়।
বিসিসি কর্তৃপক্ষের দাবি, ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য চালু করা যাচ্ছে না নাইটভিশন সুবিধাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরাগুলো।
বিসিসির সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে জানান, উচ্চ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এ ক্যামেরার মাধ্যমে নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়ক ও স্থাপনা কাভার করা যাবে।
মেয়াদের মধ্যেই ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও এখন বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে সিসি ক্যামেরাগুলো চালু করা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ বিভাগ সংযোগ দিলেই ক্যামেরাগুলো সচল করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে সহযোগিতা করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ সিটি করপোরেশনই করবে। এদিকে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রায় ২৭ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল পাওনা। এ টাকা সিটি করপোরেশন পরিশোধ তো করছেই না তার ওপরে প্রতি মাসে প্রায় ৪০ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল যোগ হচ্ছে। এ টাকা না দেওয়া পর্যন্ত নিয়ামানুযায়ী কোনো সংযোগ দেওয়া হবে না।
পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে তারা করপোরেশনের আওতায় থাকা বিভিন্ন সড়কে বাতির সংযোগ ও পানির পাম্পের সংযোগও বিচ্ছিন্ন করেছে। তবে তাতেও বকেয়া বিলের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি।
ওজোপাডিকো-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশনের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের মধ্যে ১০ কোটি টাকার ওপরে জোন-১ ও ১৫ কোটি টাকার ওপরে জোন-২ পাবে। বারবার নোটিশসহ বিভিন্ন সড়কের বাতির সংযোগ, পাম্পের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেও কোনো সুরাহা হয়নি। বরং প্রতিমাসে ৪০ লাখ টাকার মতো বকেয়া বিল বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, কিছু বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে নতুন সংযোগ বিসিসিকে দেওয়া যাবে না ঠিকই, তবে সিসি ক্যামেরার বিষয়ে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো আবেদন তারা করেনি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিসির সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. ওমর ফারুক।
নগরবাসী মনে করছেন, সিসি ক্যামেরা চালু হলে নগরের অপরাধ অনেকাংশে কমবে। কোনো অপরাধ করার আগে ধরা পড়ার ভয় সৃষ্টি হবে অপরাধীর মনে। তাই যতো দ্রুত সম্ভব সিসি ক্যামেরাগুলো চালু করার দাবি করেছেন তারা।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) ফরহাদ সরদার বলেন, সিটি করপোরেশনের এ উদ্যোগ অবশ্যই ভালো। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শপিংমল ও বহুতল ভবনগুলোতে নিজ নিজ উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭
এমএস/আরআর/এএ