আগের মতো ব্যবসা না থাকায় অনেকেই পরিবর্তন করছেন পূর্ব পুরুষের পেশা। সময় সমাজকে পরিবর্তন করায় হারিয়ে যেতে বসেছে বেদে সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে দিনাজপুর সদর উপজেলার ৮ নম্বর শংকরপুর ইউনিয়নের মোহনপুর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত বেদে সম্প্রদায়ের পলিথিনের তৈরি অস্থায়ী ১৫টি কুঁড়ের সর্দার মো. রাজন মিয়ার বক্তব্যে তাই হতাশার সুর।
তিনি বলেন, আগের মতো আমাদের (বেদেদের) ব্যবসা নাই। বর্তমানে আমরা এক প্রকার ভিক্ষা করেই দিন কাটাচ্ছি। গ্রাম-গঞ্জের বাড়িত বাড়িতে গিয়ে ভিক্ষুকের মতো চাই। কেউ দেয় চাল, তো কেউ নগদ টাকা দিয়ে থাকে। যা দিয়ে আমাদের পেট চলে। এর মধ্যে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় জড়িত হয়েছে। আর যারা আমরা ধরে আছি, তারা শুধু জাতগত পেশাকে সম্মান জানাই বলে। জাতগত ব্যবসা ধরে রাখতেই দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়াই। তবে এর মধ্যেও অনেকে এই পেশা ছেড়ে দেওয়ার উপক্রম করছে। সরকার সহযোগিতা না করলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এদেশ থেকে হারিয়ে যাবে বেদে সম্প্রদায়।
ঢাকার সাভার এলাকার তমরপুর, কাঞ্চনপুর, পোড়াবাড়ী ও বক্তারপুর থেকে আসা ১৫ পরিবারের এক সদস্য মো. মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে জানান, এক সময় শুধুই নারীরা সাপ খেলা দেখিয়ে বা কবিরাজি করে অর্থ উপার্জন করতো। কিন্তু বর্তমানে নারী-পুরুষ উভয়েই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে গ্রাম-গঞ্জে ঘুরেও আগের মতো উপার্জন করতে পারে না। এছাড়াও আগের মত এখন আর সাপ পাওয়া যায় না। আমাদের চিকিৎসাও গ্রাম্য লোকজন আগের মত নেয় না। নৌকা তৈরি করতে কাঠের মূল্য বৃদ্ধি ও নদী কমে যাওয়ার কারণে দিন দিন নৌকার ব্যবহার কমে গেছে। রাস্তা ঘাট ভাল থাকায় স্থল পথে যাতায়াত ও বসবাস করতে হচ্ছে। আজ সারাদিনে দুই কেজি চাল পেয়েছি, এখন (বিকেল) রান্না হওয়ার পরই খেতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৭
জেডএম/