ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কুমিল্লায় অপারেশন ‘স্ট্রাইক আউটে’র সমাপ্তি

ইমতিয়াজ আহমেদ জিতু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৭
কুমিল্লায় অপারেশন ‘স্ট্রাইক আউটে’র সমাপ্তি কোটবাড়ির গন্ধমতি জঙ্গি আস্তানা, ছবি: বাংলানিউজ

কুমিল্লা: কুমিল্লার সদর দক্ষিণ কোটবাড়ির গন্ধমতি জঙ্গি আস্তানার “অপারেশন স্ট্রাইক আউট” এর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. শাখাওয়াত।

শনিবার (০১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এ অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি।  

এ সময়  কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, কুমিল্লার ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুর আলমসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. শাখাওয়াত বলেন, শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গন্ধমতি এলাকার জঙ্গি আস্তানায় ১০ কেজি ওজনের তিনটি শক্তিশালী বোমা, ৬টি গ্রেনেড ও ২টি সুইসাইডাল ভেস্ট নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ২৯ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, সোয়াট, র‌্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ প্রায় সাড়ে ৩’শ সদস্য এ অভিযানে অংশ নেয়।

সন্ধ্যা ৬টার পর ওই এলাকা থেকে ১৪৪ ধারা তোলে নেওয়া হয়েছে। তবে জঙ্গি আস্তানার ওই বাড়িটি আরো কয়েকদিন নজরদারিতে রাখা হবে। এ সময় সিআইডি তাদের আলামত সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাবে।

এর আগে শুক্রবার (৩১ মার্চ) বিকেলে জঙ্গি আস্তানায় 'অপারেশন স্ট্রাইক আউট' সম্পন্ন হয়। আস্তানায় কোনো জঙ্গিকে পাওয়া না গেলেও তাদের রাখা বোমাগুলো ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধার করা হয়।

এর আগে বুধবার (২৯ মার্চ) আস্তানাটি শনাক্ত করার পর বিকেল ৪টায় জঙ্গি দু’জনের বসবাসরত সম্ভাব্য কক্ষে পুলিশ তালা ঝুলিয়ে দেয়। ওই দিন সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় বাড়ির মালিকের ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেনকে (৩০) সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়।

 এরপর সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচন থাকায় অভিযান ওই দিন ও পরের দিন ৩০ মার্চ বন্ধ রাখা হয়। বাড়িটি ঘিরে রাখে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা। শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টায় ‘অপারেশন স্ট্রাইক আউট’ শুরু হয়।

অভিযান শুরুর আগে ওই আস্তানার আশেপাশের প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রূপালী মন্ডলের নির্দেশে মাইকিং করে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের বিষয়ে স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়।

শনিবার এ অভিযানে সোয়াট টিমের দায়িত্ব পালন করেন এডিসি সাইম ও এডিসি আনোয়ার। অভিযানের শুরুতে প্রথমে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় অনুসন্ধান চালানো হয়। পরে নিচ তলার একটি কক্ষে দু’টো ট্রলিতে ৫ কেজি করে দুটি বোমা, আলাদা একটা ব্যাগে ৬টি গ্রেনেড ও ২টি সুইসাইডাল ভেস্ট পাওয়া যায়। অভিযান বিকেল সোয়া ৪টার দিকে শেষ হয়।
অভিযান চলাকালে আস্তানা লক্ষ্য করে শতাধিক রাউন্ড টিয়ার শেল ও বুলেট ছুড়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, সোয়াট ও র‌্যাব-পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী।

এ আস্তানায় বসবাস করা জঙ্গি আনাস (২০) ও রনি (২২) ৫ মাস আগে থেকে নিখোঁজ ছিলেন। জঙ্গি আনাসের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়, আর রনির বাড়ি রাজশাহী কিংবা চাঁপাইনবাবগঞ্জ হতে পারে বলে ধারণা। এ দুটি নামই তাদের সাংগঠনিক নাম। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তাদের ছবি রয়েছে। তাদের গ্রেফতাদের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৭
বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।