‘হে মহাভাগ শাঁখারি পুকুর, হে লৌহিত্য আমার পাপ মোচন কর’ -এ পবিত্র বাণী উচ্চারণের মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পুণ্যস্নানে অংশ নেন।
উপমহাদেশের ৫১টি পীঠস্থানের একটি মা ভবানী মন্দির সংলগ্ন এ শাঁখারি পুকুর।
মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) বিকেল থেকেই দূর-দূরান্তের পুণ্যার্থীরা অতীতের পাপ মোচনসহ পুণ্যলাভের আশায় মন্দির প্রাঙ্গনে আসতে শুরু করেন।
বুধবার (০৫ এপ্রিল) সকাল থেকে আরও হাজারো পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুণ্যার্থী আর দর্শনার্থীদের পদচারণায় মন্দিরস্থল ও আশপাশের এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
স্নান শেষে ঐতিহাসিক এ মন্দিরের মা ভবানী দেবীর প্রতিমা দর্শন, পূজা-অর্চনা, ভোগদান, অর্ঘ্যদান ও মাতৃ দর্শন করেন ভক্তরা। তাদের মাঝে প্রসাদ বিতরণও করা হয়।
প্রত্যেক বছর চৈত্রের রাম নবমী তিথিতে মা ভবানী মন্দির ও আশপাশের এলাকাজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় এ স্নান উৎসব।
হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে এর গুরুত্ব অনেক বেশি। তারা মনে করেন, এদিনে এখানে পুণ্যস্নানে অংশ নিলে অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূণ্যলাভ হয়। অনেকের অনেক চাওয়া-পাওয়াও থাকে মায়ের কাছে। মাকে খুশি করতে পারলে মনের অনেক বাসনা পূরণ হয়।
নারায়নগঞ্জ থেকে সপরিবারে ছবি রানী বাংলানিউজকে বলেন, ‘জীবনে চলার পথে জেনে না জেনে অনেক পাপ কাজ করে ফেলি। তাই পাপ মোচনে মায়ের কাছে এসেছি। মায়ের দর্শন নেওয়ার আগে স্নান করি। এরপর মায়ের কাছে যাই। তার কাছে জীবনের পাপ মোচনের জন্য প্রার্থনা করেছি’।
নওগাঁর মহাদেবপুর থেকে আসা আরতী রানী ঘোষ, পাবনার নগরবাড়ীর বেলা দাস, ও নাটোরের শুকলাল দেব বলেন, ‘মায়ের মন্দিরে এলে দেহ-মন পবিত্র হয়। মায়ের কাছে ঠিকমতো চাইতে পারলে মনের বাসনাও পূরণ হয়। এমন আশা নিয়েই মায়ের কাছে আসা’।
স্নান উৎসবের মেলায় মিষ্টান্ন সামগ্রীসহ রকমারি খাবার, শিশুদের খেলনা, ইতিহাস-ঐতিহ্যভিত্তিক বই-পুস্তকের পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
ভবানীপুর মন্দির উন্নয়ন সংস্কার ও পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কল্যাণ প্রসাদ পোদ্দার ও সাংগঠনিক সম্পাদক নিমাই ঘোষ বাংলানিউজকে জানান, শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরা নিয়োজিত রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৭
এমবিএইচ/জিপি/এএসআর