বুধবারের (৫ে এপ্রিল) ঝড়ে তার ফসল মাটির সাথে মিশে গেছে। প্রচুর শীলাবৃষ্টির ফলে গাছের পাতা পর্যন্ত ঝরে পড়েছে।
একদিন পর বিকালে ফসলের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, জমির আইলে দাঁড়িয়ে নষ্ট হওয়া ফসলের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন শহীদুল। ক্ষতির কথা জিজ্ঞাসা করতেই ডুকরে কেঁদে উঠেন। বলেন, ‘ভাই খামু কী? আমগোর বাচনের তো কিছু রইল না’।
শহীদুল জানায়, ১৮ শতক জমিতে মরিচ, ১৫ শতক জমিতে বাদাম ও ৩০ শতক জমিতে বেলীর ডাল চাষ করেছিলেন। ফসল সবে মাত্র গাছে ওঠা শুরু করেছে। আর কয়েক দিন পার হলে তা বাজারে নিয়ে বিক্রি করা যেত। কিন্তু অসময়ের ঝড়ে পুরো মাঠের ফসলই বিলীন হয়ে গেছে।
কথা হয় নার্গিস আক্তার নামের নারী প্রান্তিক কৃষকের সাথে। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৬০ শতক জমিতে মরিচ, ৫০ শতক জমিতে চিচিঙ্গা, ১৫ শতক জমিতে বেগুন ও ৩০ শতক জমিতে শসা চাষ করেছিলেন। ঝড়ে তার সব ফসলই নষ্ট হয়ে যায়।
শুক্কুর আহম্মদ নামে আরেক কৃষক জানান, ব্র্যাক ব্যাংক থেকে তিনি ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ৭০ শতক জমিতে ঢেঁডশ চাষ করেছিলেন। ঠিক মতো ফসল বিক্রি করতে পারলে তার দুই লাখ টাকার উপর আয় হতো। লাভের মুখ দেখা তো দূরে থাক, উল্টো ঋণের বোঝা কাঁধে উঠলো তার।
এলাকার ফসলের ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠে চাষ হয়েছিল মরিচ, আলু, বাদাম, শশা, বেলীর ডাল, সয়াবিন, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা প্রকারের সবজি। ঝড়ো হাওয়া এবং প্রবল শীলা বৃষ্টির কারণে ফসল মাটির সাথে মিশে গেছে। তলিয়ে গেছে পানিতে। ফসলের এক ভাগও রক্ষা করতে পারেনি কৃষক। পুঁজি আর পরিশ্রমের ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রান্তিক কৃষকের এখন মাথায় হাত।
এখন তাদের একটাই ভরসা, সরকারিভাবে যদি তারা প্রণোদনা পান তাহলে হয়তো সামান্য ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শরীফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ক্ষতির খবর পেয়ে তিনি মাঠ পরিদর্শন করেছেন। শিগিগিরই মাঠ জরিপ করা হবে।
চর শাহপুর এলাকায় সুজাপুর মৌজার প্রায় ১০ হেক্টরের মত জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা দেন এই কৃষি অফিসার।
তিনি বলেন, জরিপ করার পর কৃষকদের সহায়তার ব্যাপারে বাজেট পাঠানো হবে। তা পাস হয়ে আসলে কৃষকদের প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৭
এসএউচডি/এমআইএইচ/জেডএম