ধান হারিয়ে কৃষকরা হতবাক হয়ে পড়েছেন। তারা এখন পাগল প্রায়।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দেখার হাওর, কাই হাওর, জাম কলা হাওর, সাংহাই হাওরের ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
দেখার হাওরে ধান চাষী জসিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর ২০ কেদার জমিতে ধান চাষ করেছি। কিন্তু পানিতে আমার সব ধান তলিয়ে গেছে। এ বছর একটি ধানও পাবো না।
তিনি বলেন, চাল কিনে খেতে হবে। আগামী এক বছর কিভাবে সংসার চালাবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। আমরা এখন কার কাছে যাব।
সাংহাই হাওরে জমি চাষ করা বর্গা চাষী সঞ্জব আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমার সব শেষ। আমি অন্যের জমি চাষ করি। অনেক আশা নিয়ে মহাজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বীজ ও সার ক্রয় করে ধান চাষ করেছি। কে জানে যে এই চৈত্র মাসে বৃষ্টি হবে আর বাঁধ ভেঙ্গে এতো বড় সর্বনাশ হবে।
“আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকারকে একটি কথা বলব, সরকার যেন আমাদরে সাহায্য করে। না হলে আমরা কৃষকরা না খেয়ে মারা যাবো”।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ১৩ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে, এই জমির ধান পাওয়া গেলে বাজার মূল্য হতো প্রায় ৯০ কোটি।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ঠিকাদার বাঁধ মেরামতের টাকা মেরে খাওয়ায় আজ বাঁধ ভেঙে জমির ফসল তলিয়ে গেছে। ঠিকাদারদের শাস্তি ও ক্ষতি পূরণের দাবিতে কৃষক নেতারা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা যায়। ৩ এপ্রিল সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার সাধারণ কৃষকরা।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলায় এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আর যেগুলো জমিতে বৃষ্টির পানির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে সে জমিরও ধান গাছের গোড়ায় পচন ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি ও বাঁধ ভাঙ্গার কারণে কৃষক এ বছর ধান পাবে না বললেই চলে।
এর মধ্যে আশার কথা হচ্ছে, দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের কাটি ভাঙ্গা হাওরের ধান এখন পর্যন্ত সুরক্ষিত রয়েছে।
তবে বৃষ্টি বেড়ে গেলে এখানেও ধান রক্ষা করা যাবে না বলে জানান এই হাওরে জমি চাষ করা স্থানীয় কৃষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএম