শুক্রবার সকালে হাজারীবাগের ক্রিসেন্ট লেদার লিমিটেডের কারখানায় দেখা যায়, চামড়া শুকানোর কাজ চলছে। ভেতরে অন্যান্য দিনের মতোই নানা ধরনের প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী আনা-নেওয়া করছেন শ্রমিকরা।
১২৭, হাজারীবাগে রয়েছে এপেক্স লেদার লিমিটেডের কারখানা। মূল ফটক দিয়ে তাকালেই দেখা যায় জ্বলছে লাইট, চলছে ফ্যান। কারখানার ওপরে থাকা চিমনি দিয়ে উড়ে যাচ্ছে ধোঁয়া। চামড়া শুকানোর প্রক্রিয়া চলছে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী।
ক্রিসেন্ট লেদার, এপেক্সের মতো একই চিত্র দেখা যায় ফিনিক্স লেদার, রূপালী লেদারের কারখানায়ও। শুধু ক্রিসেন্ট লেদার, এপেক্স লেদার, রূপালী লেদারের কারখানাই নয়, হাজারীবাগের প্রায় সব কারখানায়ই রয়েছে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সংযোগ। কাজ চলছে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী।
তবে হাজারীবাগের বেশিরভাগ ট্যানারি কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ফিনিসড লেদার, লেদার গুডস ও ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার জানা মতে, হাজারীবাগের বেশিরভাগ কারখানাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিছু কারখানা তাদের জরুরি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কারণ, অনেকেরই জরুরি রফতানি আদেশ আছে। আর পরিবেশ দূষণ হয় না এমন কাজই চলছে।
আন্তঃসংদীয় ইউয়নের ১৩৬তম সম্মেলন বাংলাদেশে হওয়াতে যথেষ্ট পরিমাণ পুলিশ না পাওয়ায় ০৬ এপ্রিলের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর হাজারীবাগের সব কারখানার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিষয়টির আইনজীবি মনজিল মোরসেদ।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ০৬ এপ্রিলের মধ্যে হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোতে বিদ্যুৎ, পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও, আইপিইউ চলার কারণে প্রয়োজনীয় পুলিশ না পাওয়ায় তারা তা করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন।
শনিবার (০৮ এপ্রিল) পরিবেশ অধিদপ্তর তাদের কাজ সম্পন্ন করবে বলে আশা করছে। পরিবেশ দূষণ হয় না এমন কাজ হাজারীবাগে চললে সমস্যা নেই কিন্তু তারা প্রতিবারই নানা টালবাহানা করে সাভারে কারখানা স্থানান্তরের কাজ সম্পন্ন করেন না। আর তাই এবার শক্ত অবস্থানে যেতে হয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
হাজারীবাগে থাকতে ট্যানারি মালিকদের আবেদন হাইকোর্টে খারিজের একদিন পর ‘০৬ এপ্রিলের মধ্যে ট্যানারি ক্লোজ ডাউন’ করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এরপর উচ্চ আদালতের নির্ধারিত জরিমানা স্থগিতের আবেদনটি আগামী ০৯ এপ্রিল বিবেচনা করবেন বলে জানিয়ে ছিলেন ৩০ মার্চ।
জরিমানার আদেশ পুনর্বিবেচনা ও স্থগিত চেয়ে ট্যানারি মালিকদের করা দু’টি আবেদনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। অন্যপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৭
ইউএম/এসএনএস