ঢাকা, রবিবার, ২৬ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ডাক বিভাগের ‘মেইল গাড়ি’ সুফিয়ার হাতে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৭
ডাক বিভাগের ‘মেইল গাড়ি’ সুফিয়ার হাতে ডাক বিভাগের মেইল গাড়ির স্টিয়ারিং ধরছেন সুফিয়া/ছবি: সুমন-বাংলানিউজ

ঢাকা: চ্যালেঞ্জ নিয়ে ডাক বিভাগের গাড়ি চালকের আসনে প্রথমবার বসছেন দশ নারী। কাজটি কঠিন হলেও তাদের হাতে থাকা স্টিয়ারিংয়েই গাড়ি ঘুরবে ঢাকা শহর। পৌঁছে যাবে ডাক। এই কঠিন কাজে পুরুষ চালকদের সহযোগিতাই একমাত্র প্রত্যাশা বলে জানালেন এদের একজন সুফিয়া।

রাস্তায় যেখানে হাজারে একজন নারী চালক পাওয়া দুষ্কর, সেখানে দীর্ঘ পথ মাড়িয়ে গাড়ি চালাতে সুফিয়া থাতুন এসেছেন ঢাকায়। পেয়েছেন ডাক বিভাগের ‘মেইল গাড়ি’ চালানোর দায়িত্ব।



শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার হাতিবান্দা ইউনিয়নের ঘাগড়া কোনাপাড়া গ্রামের সন্তান সুফিয়া খাতুন (২৫)। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয় সুফিয়ার আগে থেকেই রয়েছে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা।

বাবা অসুস্থ থাকায় এসএসসি পাসের পর সংসারের হাল ধরতে শেরপুর ব্র্যাকে চাকরি নেন। নিজ গ্রামে ব্র্যাকের কিশোরী ক্লাবে থাকাকালীন ব্র্যাক থেকে দুই মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে চার মাস গাড়ি চালিয়েছেন। পিকআপ, পাজারো, হাইএস-এর মতো গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে সুফিয়ার।

কুষ্টিয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রামীণ কমউনিকেশন প্রকল্পে চাকরি করার সময় গাড়ি চালিয়েছেন। এরপর বরিশালে আইডিই বাংলাদেশেও করেছেন একই কাজ।
ডাক বিভাগের মেইল গাড়ির স্টিয়ারিং ধরছেন সুফিয়া/ছবি: সুমন-বাংলানিউজ
ডাক বিভাগে চাকরির খোঁজ পেয়ে সিভি জমা দেন। এরপর ফোন করে নেওয়া হয়েছে গাড়ি চালানোর পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অন্য দশজনের মধ্যে সুফিয়ার হাতেও এসেছে ডাক বিভাগের গাড়ির চাবি।

সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালানোর জন্য মনোনীত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত সুফিয়া বাংলানিউজকে বলেন, স্বীকৃতি পাওয়াটাই বড় ব্যাপার। এটা বড় চ্যালেঞ্জ। প্রথম মেয়েরা এসেছে। ছেলেরা সহযোগিতা করলে আরও সহজ হবে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চালক হিসেবে চাকরির শুরুতে অনেক কষ্ট ছিল জানিয়ে সুফিয়া বলেন, এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ছেলেরা সহযোগিতা করে। নিজে থেকেই সেভ থাকতে হবে। তাহলে সমস্যা হবে না।

মাসিক ১৭ হাজার টাকা বেতনের পাশাপাশি ওভারটাইমের অর্থ এবং বোনাস রয়েছে জানিয়ে সুফিয়া বলেন, সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঢাকার মধ্যে গাড়ি চলবে। এতেই সংসারের খরচ চলে যাবে।

বলেন, বাড়িতে অসুস্থ বাবা, মা আছেন। এক ছোট বোন ডিগ্রি ও আরেকজন নবম শ্রেণির ছাত্রী। এক ভাই পড়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে। বাবার চিকিৎসার খরচ এবং ভাই-বোনদের পড়াশোনার খরচ এখান থেকেই মিটবে।

দু’মাস আগে বিয়ে হয়েছে। তবে এই চাকরিতে স্বামীর সমর্থন রয়েছে বলেও জানান সুফিয়া।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৭
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।