ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

হাতিরঝিলে চালু দক্ষিণ এশিয়ার বড় বর্ণিল ফোয়ারা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
হাতিরঝিলে চালু দক্ষিণ এশিয়ার বড় বর্ণিল ফোয়ারা হাতিরঝিলে চালু হলো দক্ষিণ এশিয়ার বড় বর্ণিল ফোয়ারা। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: বাজছে গান; চলছে লাল, নীল, বেগুনি, সবুজসহ অসংখ্য রঙের খেলা; সঙ্গে জলের নাচন। বিনোদনের জন্য হাতিরঝিলে ঘুরতে গিয়ে এখন এমন হৃদয়কাড়া ইউরোপ-আমেরিকান ঢঙের পরিবেশই উপভোগ করবেন নগরবাসী। রাজধানীবাসীর চিত্তবিনোদনের জন্য এমন বর্ণিল আলোর ফোয়ারা উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হাতিরঝিলের সৌন্দর্য্য বাড়াতে সেখানে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ‘বেগুনবাড়ি খালসহ হাতিরঝিল এলাকার সমন্বিত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পে মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ওয়াটার ফাউন্টেইন এবং অ্যাম্ফিথিয়েটারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় বর্ণিল ফোয়ারা।

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর এখন থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সংগীতের তালে তালে বর্ণিল আলোর সঙ্গে হাতিরঝিলে দেখা যাবে জলের নাচন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটিকে নগরবাসীর চিত্তবিনোদনের তার নববর্ষের উপহার হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

স্বভাবতই রাতেই বেশি নজর কাড়বে জলের নাচনের সঙ্গে লাল, নীল, বেগুনি, সবুজসহ অসংখ্য রঙ। হাতিরঝিলের আশপাশের গুলশান, পুলিশ প্লাজা, মেরুল বাড্ডা, মুধবাগ ও মহানগর প্রজেক্ট এলাকা থেকে দেখা যাবে রঙিন ফোয়ারার এই খেলা।  

হাতিরঝিলে দক্ষিণ এশিয়ার বড় বর্ণিল ফোয়ারা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ছবি: পিআইডি১ হাজার ৯৮০ বর্গমিটারের এ রঙিন ফোয়ারাটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় রঙিন ফোয়ারা বলে দাবি নির্মাতাদের। ফোয়ারার পানি ১০ মিটার থেকে সর্বোচ্চ ৮০ মিটার পর্যন্ত ওপরে উঠবে।

আপাতত প্রতিদিন মাগরিব ও এশার পর ১৫ মিনিট করে দেখা যাবে জলের নাচন।

হাতিরঝিলের গুলশানের আড়ং শো রুম ও পুলিশ প্লাজার মাঝামাঝি অংশে গোলাকার অ্যাম্ফিথিয়েটার (উন্মুক্ত মঞ্চ) তৈরি করা হয়েছে। এই থিয়েটারটিতে একসঙ্গে দুই হাজার মানুষ বসতে পারবে। এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপভোগের পাশাপাশি ফোয়ারার জলের খেলা দেখা যাবে।

বাংলাদেশ সেনাবিহিনীর স্পেশাল ওয়াকার্স অর্গানাইজেশন (এসডিব্লও ও-পশ্চিম) গণপূর্ত অধিদপ্তর, রাজধানী উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ (রাজউক) এবং ঢাকা ওয়াসা’র সহযোগিতায় নির্মাণ করা হয়েছে স্থাপনা দু’টি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধে কর্মরত। এই জীবনযুদ্ধে হিমশিম খাওয়া মানুষগুলোর তো মাঝে মাঝে একটু চিত্তবিনোদনের প্রয়োজন। আমাদের চিত্তবিনোদনের সুযোগটা খুব সীমিত। মানুষের চিত্তবিনোদনের একটু সুযোগ করে দিতে এই অ্যাম্ফিথিয়েটার এবং ফাউন্টেইনটা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জীবন নিয়ে যাদের চিন্তাযুক্ত থাকতে হচ্ছে, সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে- সেখানে তাদের জীবনটাকে একটু সহজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।  

মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ফাউন্টেইন এবং অ্যাম্ফিথিয়েটারের প্রতি যত্নবান হওয়ার পাশাপাশি হাতিরঝিলের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি সবাইকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।  হাতিরঝিলে দক্ষিণ এশিয়ার বড় বর্ণিল ফোয়ারা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ছবি: পিআইডিতিনি বলেন, এটিসহ সকল স্থাপনার সৌন্দর্য রক্ষা আমাদের দায়িত্ব। এসব স্থাপনার যত্র-যত্র এটা-ওটা ছুঁড়ে না ফেলা, এসব স্থাপনা জাতীয় সম্পদ, এগুলো রক্ষা এবং রক্ষণাবেক্ষণ আমাদেরই দায়িত্ব।

নববর্ষ ও মঙ্গল শোভাযাত্রার সঙ্গে ধর্মকে না মেলানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা নববর্ষ, এটা বাঙালির। আমরা এই অঞ্চলে বাংলা নববর্ষটা উদযাপন করি। এর সঙ্গে আর অন্য কিছু মিলিয়ে ফেললে হবে না। এর সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্কটা সংস্কৃতির।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক।

প্রকল্প পরিচালক মেজর জেনারেল আবু সাইদ মোহাম্মদ মাসুদ ফোয়ারা ও অ্যাম্ফিথিয়েটারের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
এমইউএম/এইচএ/

আরও পড়ুন
** ‘ঝিলের জলে আলোর নাচন’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।