শনিবার (১৫ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি দৈনিজ কাগজ আয়োজিত ‘জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদকের আগ্রাসন রোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পত্রিকাটির সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ও ফেনী পৌর মেয়র আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব ড. মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ।
অতিথি ছিলেন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সালাউদ্দিন মাহমুদ, আইনজীবী ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ও পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ফজলুল হক ভূঁইয়া রানা।
কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ধর্মকে বিকৃতিভাবে উপস্থাপনে বিপত্তি ঘটে। মূলত ধর্মান্ধতা থেকেই মৌলবাদের সৃষ্টি। আর সেখান থেকে জঙ্গিবাদ। এটা নির্মূলে সামাজিকভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, জঙ্গিবাদ একদিনে সৃষ্টি হয়নি। ’৭৫ এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে এবং ’৭৯ সালে আফগানিস্তান ফেরত যোদ্ধারাই জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করে। আর এ জঙ্গিবাদ রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হবে। এটা একটা বৈশ্বিক সমস্যা। বিশেষ করে আকাশ সংস্কৃতি ও স্যোশাল মিডিয়ায় এর প্রভাব রয়েছে। তার সঙ্গে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রভাবও রয়েছে।
তিনি বলেন, যখন মধ্যপ্রাচ্যে আইএস এর প্রভাব নিম্নমুখী, তখন আমাদের দেশে তা উস্কে দিচ্ছে। এটা অভ্যন্তরীণ ইন্ধন। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার পরে এটার উস্কানি বেশি হয়েছে।
আছাদুজ্জামান মিয়া আরো বলেন, গত বছরের ১ জুলাই হলি আর্টিজানে হামলা হয়েছে। সেখানে আমি ২০ মিনিটের মধ্যে যাই। বিভিন্ন অফিসারকে নিয়ে প্রথমে আর্জেন্টাইন নাগরিকসহ কয়েকজন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে আসার সময় বিস্ফোরণে আমাদের দুজন অফিসারকে হারাই। এরপর আমাদের অভিযানের ধরনে মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়। তারপর শুধু সাফল্যের ইতিহাস। কল্যাণপুর, সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, সিলেটসহ সারাদেশে সফলতার সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
এর মধ্যে দুভার্গ্যজনকভাবে সিলেটে র্যাবের আজাদসহ দুজন সহকর্মীকে হারাই। আমার জীবন দিয়ে মানুষের জীবনকে রক্ষা করি। কিন্তু দুঃখ যখন আমাদের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। যারা প্রশ্ন তোলে তারা জ্ঞানপাপী। জেগে জেগে ঘুমায়।
একজন জঙ্গি যখন সুসাইডাল ভেস্ট নিয়ে, কিংবা দশ কেজি বোমা বহন করে তখন কি করা উচিত প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এরপরও আমরা কল্যাণপুরসহ বিভিন্নস্থানে জীবিত সক্রিয় জঙ্গি আটক করেছি।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পহেলা বৈশাখে জনগণের মনে কোনো শঙ্কা দেখিনি। শঙ্কা ছিলো আমাদের মনে। সরকারের মনে। রাত ১১টায়ও হাজারো মানুষের ঢল ছিলো হাতিরঝিলে। আমরা তাদের বের করে দিইনি। কারণ দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতির অবাধ চর্চার মাধ্যমে জঙ্গিবাদের শক্তি হারিয়ে যাবে। এতে অপশক্তিও স্থান পাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
ইএস/জেডএম