রাজধানীর কাকরাইলে জাজেস টাওয়ারে বিচারপতিদের জন্য নবনির্মিত বহুতল ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শনিবার (১৫ এপ্রিল) এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথি হিসেবে ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘একটি মহল সব সময় সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যে দূরত্ব তৈরির অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। এরকম ভুল বোঝাবুঝির কারণে দেশের সাধারণ জনগণের কাছে ভুল বার্তা চলে যায়’।
তিনি বলেন, ‘গত কিছুদিন আগে সরকার বিচার বিভাগ সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে বিচার বিভাগের অভিভাবক হিসাবে প্রধান বিচারপতিকে কোনো কিছুই অবহিত করা হয়নি। সম্পূর্ণ ভুল তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে সরকার প্রধানের কাছ সত্য গোপন করে সিদ্ধান্তগুলো হাসিল করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করা হলে ভুল বোঝাবুঝি হতো না’।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘প্রত্যেক বিভাগকে দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। কখনো কখনো দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে শীতল সম্পর্কের সৃষ্টি হতে পারে। তবে, এ সম্পর্ককে ইতিবাচক দৃষ্টিতে গ্রহণ করলে প্রত্যেক বিভাগের সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও সমগ্র জনগোষ্ঠীর প্রভূত কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে’।
তার সময়কার সফলতার কথা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সীমিত সম্পদ ও বাজেট সত্ত্বেও দৃঢ়ভাবে দাবি করতে পারি যে, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান বিচার ব্যবস্থা সুশৃঙ্খল এবং জনগণের সর্বোচ্চ আস্থা অর্জন করেছে’।
মামলাজট কমানোর সফলতার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মামলার জট কমানো’।
বিচারক স্বল্পতা ও অবকাঠামোগত অসুবিধার কথা তুলে ধরে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, বিচারক সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। ভারতে দশ লাখ মানুষের জন্য ১৮ জন বিচারক রয়েছেন, বাংলাদেশে মাত্র দশজন।
বিচারকদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি।
একটি পূর্ণাঙ্গ ও আধুনিক ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি স্থাপনে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
এমইউএম/এএসআর