খুলনার জাতিসংঘ শিশু পার্কে বৈশাখী মেলায় আসা লোকদের আকৃষ্ট করতে এমনভাবে হাক ডাক ছাড়ছেন মিরাজ নামের এক বিক্রেতা।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) মেলার দ্বিতীয় দিন পরন্ত বিকেলে কথা হয় মিরাজের সঙ্গে।
![মেলায় খেলনা কিনতে আসা শিশু-কিশোররা/ছবি: বাংলানিউজ](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/Munna120170415191556.jpg)
মেলায় আসা নিয়ামুল বারী নামের এক প্রবীণ বলেন, মিষ্টি স্বাদের খাবার বাতাসা আর দানাদার। খুবই মজার এ দুটি খাবার। এক সময় কোনো শুভ কাজে এসব বিতরণের প্রচলন ছিলো। এখন আর তেমন দেখা যায় না। মেলায় এসে বাতাসা আর দানাদার কিনেছি।
বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে আসা নাজমুল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, মেলায় এসে নানা ধরণের খাবার খেয়ে যেমন মজা পেয়েছি। তেমনি গান আর নাচ দেখেও ভালো লেগেছে।
মায়ের সঙ্গে মেলায় আসা শিশু মীম বলে, মাটির তৈরি পুতুল, টিয়াপাখি, হাঁস কিনেছি। নাগর দোলায় দুলেছি। খুব মজা লেগেছে।
শুধু খাবার নয়, মেলায় অনেকে পসরা সাজিয়েছেন মাটির তৈরি পুতুল, ব্যাংক, আম, কাঁঠাল, ঘোড়া, হাতি, মাছ, হরিণ, ময়ুর, সিংহসহ হরেক রকম খেলনা। এছাড়া গৃহস্থালির হাড়ি, পাতিল, ঢাকনা, ঝাজর, কলসসহ নানান তৈজসপত্রসহ ঘর সাজানোর জন্য ফুলদানি, টবসহ নানান জিনিসপত্র।
মানুষের আদলে গড়া রঙিন পুতুল সহজেই নজর কাড়ছে মেয়ে শিশুদের। কত রকমের পুতুল। পুতুলের সঙ্গে রয়েছে মাটির তৈরি হরেক রকমের মাছ, বাঘ, সিংহ, হাতি, গরু, ঘোড়া, গাধা, কচ্ছপ, সাপ, ব্যাঙ, কুমির, কাঠবিড়ালি, বানর, হনুমান, টিয়াপাখি, কবুতর, হাঁস, রাজহাঁস, মোরগ-মুরগি, চিল, ঈগল, মাছরাঙ্গা, বক, সারস, ধনেশ, হলদে পাখি, পোড়ামাটির নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার, গরুর গাড়ি, কাঠের তৈরি রাজা ও রানী।
মহানগরীর জাতিসংঘ শিশু পার্কে খুলনার আব্বাসউদ্দীন একাডেমি তিন দিনব্যাপী এ বৈশাখী মেলার আয়োজন করে। পহেলা বৈশাখে শুরু হওয়া এ মেলা শেষ হবে রোববার (১৬ এপ্রিল)।
খুলনা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে তিনদিনব্যাপী এ মেলার মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা মেলায় বিক্রির সরঞ্জাম নিয়ে ছোট ছোট মাদুর বিছিয়ে দোকান পেতে বসে আছেন। কেউ কেউ স্টল দিয়ে টেবিলে জিনিসপত্র সাজিয়েছেন। মেলার মাঠ ছাড়াও আশপাশের রাস্তার দুই পাশে বসেছেন অনেকে।
মেলায় শোভা পাচ্ছে অসংখ্য বৈশাখী মেলার জিনিসপত্র। আর ওইসব বৈশাখী জিনিস ক্রয় করতে মহানগরী ও জেলার বিভিন্নস্থান থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীরা ছুটে আসছেন। মেলার মঞ্চে চলছে আব্বাস উদ্দীন একাডেমীর শিল্পীদের পরিবেশনায় গান, নাচ ও নৃত্য নাট্য।
আব্বাসউদ্দীন একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক বাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, এ মেলাটি প্রায় শত বছরের বৈশাখী মেলা হিসেবে খুলনাতে পরিচিত। মেলার আঙ্গিনায় ৬০ টি অধিক স্টল রয়েছে। যেখানে বৈশাখী আমেজের বাঁশি, ঢোল, বেলুন, মাটির তৈরি হাতি, ঘোড়া, ফুল, পাখিসহ অসংখ্য জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া পাওয়া যাচ্ছে, নানা রকমের মজাদার খাবার।
তিনি জানান, মেলায় প্রতিদিন বাউল, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, কবিগান, লাঠিখেলা, লোক নাটক ও নৃত্য নাট্যসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত বিনামূল্যে সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে এ মেলা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
এমআরএম/ওএইচ/বিএস