ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভাঙনের মুখে মনপুরার পর্যটন কেন্দ্র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
ভাঙনের মুখে মনপুরার পর্যটন কেন্দ্র ভাঙনের মুখে মনপুরার পর্যটন কেন্দ্র

মনপুরা থেকে ফিরে: ভোলার মনপুরা উপজেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান মনপুরা ফিশারিজ (প্রোজেক্ট)। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য দর্শনীয় এ স্থান আজ মেঘনার ভয়াবহ ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে। যেকোনো সময় দর্শনীয় এ স্থানটি মেঘনায় বিলীন হয়ে যেতে পারে।

ইতোমধ্যে এই স্থানের এক তৃতীয়াংশ জায়গা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি অংশটুকুও ভাঙনের সম্মুখীন।

এতে করে কোটি টাকার সম্পত্তি আজ পানিতে তলিয়ে যেতে বসেছে।

স্থানীয় স‍ূত্রে জানা যায়, ২৩ বছর আগে মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নে ৬১ একর জমির ওপর মনপুরা ফিশারিজ নামে একটি মৎস্য খামার তৈরী করেন স্থানীয় বিএনপি নেতা সামস উদ্দিন বাচ্ছু চৌধুরী। সেই খামার বাড়িকে কেন্দ্র করে গড়ে ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কেন্দ্র।

ভাঙনের মুখে মনপুরার পর্যটন কেন্দ্র

নান্দনিক সৌন্দর্য্য থাকায় সেখানে পর্যটকদের জন্য একটি আর্কষণীয় স্থান। সেখানে শীত মৌসুমে বেড়াতে কিংবা দেখার জন্য ছুটে আসে হাজারো মানুষ। ধীরে ধীরে স্থানটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠে। বাহারি বৃক্ষরাজি, নির্মল বাতাস, নদীর উত্তাল ঢেউ এবং সূর্যদয় ও সূর্যাস্তের দেখা যায় এ খামার বাড়ি থেকে। গত ২/৩ বছরে মেঘনার ভাঙ্গনে ৩১ একর এলাকা নদীতে হয়ে গেছে বাকি ৩০ একর ভাঙনের মুখে। যেকোনো সময় পুরো বাংলোসহ ফিশারিজ মেঘনায় বিলীন হয়ে যেতে পারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফিশারিজের পেছনের অংশে বড় বড় ফাটল। ঢেউয়ের তোড়ে নদীতে পড়ে যাচ্ছে বড় বড় নারিকেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সামান্য বাঁধ দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করা হলেও তা কোনো কাজে আসছেনা, প্রবল স্রোতে পাড় ভেঙে যাচ্ছে। হঠাৎ করেই ভাঙন বৃদ্ধিকে গতিপথ পরিবর্তন এবং ডুবোচরের কারণ বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

ভাঙনের মুখে মনপুরার পর্যটন কেন্দ্র

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিভিশন-২) কাওছার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, মনপুরা উপজেলার ছয়টি পয়েন্টে মেঘনার ভাঙন রয়েছে, ওইসব পয়েন্টে জরুরি ভাঙন রোধের জন্য দুই কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন চাওয়া হয়েছে কিন্তু সেটা এখনো পাশ হয়নি। এছাড়াও রামেনওয়া নামে আরও ১৯২ কোটি টাকার তিন কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ আগামী শুষ্ক মৌসুমে শুরু হবে।

জলবায়ু নিয়ে কাজ করছেন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা তানজিলুর রহমান রাফী বাংলানিউজকে জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মনপুরায় ভাঙন বেড়েছে। জলবায়ু ঝুঁকি থেকে রক্ষায় এবং সক্ষমতা বাড়াতে আমরা কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে কাজ করছি, এতে মানুষ সচেতন হচ্ছে। তবে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় আরও বেশি বেশি কাজ করতে হবে। অন্যথায় দিন দিন বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে মানচিত্র ছোট হয়ে যাবে মনপুরা।

এদিকে, পর্যটন শিল্প তথা মনপুরার অপরূপ সৌন্দর্য্যমণ্ডিত স্থান হিসাবে পরিচিত মনপুরা ফিশারিজ রক্ষার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।