শনিবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে ঢাকা অদূরে ধামরাইয়ের যাত্রাবাড়ি মাঠে আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী চড়কপূজার। মাধবমন্দিরের ঠিক সামনেই এর এক বিশাল আয়োজন।
বিকাল হতেই শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ-বনিতা সকলে দলে দলে আসতে শুরু করে। কানায় কানায় ভরে ওঠে মাঠের চারপাশ। কেউ কেউ আবার দেখার জন্য স্থান করে নেয় আশপাশের উচুঁ দালানগুলোতে।
চড়কপূজাকে ঘিরে শুরু হয়েছে মেলা। বেলুন, বিভন্ন খেলনা, খাবার ইত্যাদির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
মানুষের মাঝে এক অন্যরকম আনন্দ কাজ করছে। সবাই সাজগোজ করে তাদের আনন্দের বহির্প্রকাশ ঘটিয়ে চলেছে। ঢাকঢোল বাজিয়ে, উলুধ্বনি দিয়ে, দুধ, ফলমূল, ধান-দূর্বা, বেলপাতা, আমপাতা, পেঁপে, শসা, বাতাসা, চন্দন এসবের সমাহারে চলে পূজা-অর্চনা।
পূজা পরিচালনা করেন গৌড়চন্দ্র ঘোষ(পুরোহিত)। ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ভগবান মহাদেবের (শিবের অপর নাম) জন্যই পূজার আর্বিভাব ঘটান। এরপর থেকেই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এ পূজা। অনেকের কাছে আবার এ পূজাটি নীল পূজা নামেও পরিচিত রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকোৎসব। মূলত চৈত্রের শেষ দিনে এ পূজা অনুষ্ঠিত হলেও বৈশাখের প্রথম দু-তিনদিনব্যাপী চড়ক পূজার উৎসব চলে। এটি শিবের গাজন উৎসবের একটি অঙ্গ। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে যা চড়ক সংক্রান্তির মেলা নামে অভিহিত।
চড়ক পুজায় এবার চড়কে ওঠেন নিতাইপদ মন্ডল ও প্রেমকুমার। নিতাই প্রায় ১৩ বছর ধরে চড়ে আসছেন এ চড়কে। অপর দিকে প্রেমকুমারের এবারই প্রথম।
অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বাংলানিউজকে তারা বলেন, আমরা পূজার জন্য ভগবানের তুষ্টির জন্য চড়কে চড়ে থাকি। এর ফলে সকলে আনন্দ পায় আবার সৃষ্টিকর্তাও তুষ্ট থাকেন। জগতের সুখ-শান্তি, আর সমৃদ্ধি কামনায় আমরা এই পূজা করে থাকি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
জেএম