ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সিটিং থেকেও ভাড়া বেশি লোকালে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৭
সিটিং থেকেও ভাড়া বেশি লোকালে! সিটিং থেকেও ভাড়া বেশি লোকালে!

ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর আনসার ক্যাম্প থেকে নতুনবাজার যাবেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র। উঠেছেন জাবালে নূর পরিবহনে। ক্লাস নাকি পরীক্ষার কী যেন এক তাড়ায়, থেকে থেকে আওয়াজ দিচ্ছিলেন, ‘ও মামা যান না, আর কতক্ষণ দাঁড়াবেন’।

দুইবার এ কথা বলতেই কন্ডাক্টরের বিরক্তি সুরে উত্তর, ‘এখন আর কোনো কথা না। লোকাল বাস লোকাল যাবে।

সাঁই করে টানার দিন শেষ!’

তখন সে শিক্ষার্থীর মুখ কালো হয়ে গেলেও কিছুই করার ছিল না। সারা রাস্তা আর কিছুই বললেন না তিনি। শুধু মুছে গেলেন টেনশনে সৃষ্ট কপালের ঘাম!

সারাটা পথেই তাকে দেখতে হলো এই কোনা-ওই কোনায় থেমে যাত্রী তোলার চিত্র। এতে যেমন বিরক্তি প্রকাশ করলেন, তেমনি চোখে-মুখে ভেসে এলো তার শান্তির যাত্রার অকাল মৃত্যু!জাবালে নূর বাস

পাশ থেকে অন্য যাত্রীদেরও একই দশা। তারাও চরম বিরক্ত। তাতে কী আসে-যায়। বাস যাচ্ছে হেলে-দুলে! পাশাপাশি ঠেলাঠেলি তো একদিনেই স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আগে মধ্যবর্তী স্টপেজ থেকে যারা বসে যেতে পারতেন তারা এখন রীতিমতো দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। এতে ক্ষোভও কম নয় নিয়মিত যাতায়াতকারীদের।

এই ক্ষোভগুলো আরও তীব্রভাবে, একত্রে প্রকাশ পেলো যখন ভাড়া নিতে এলেন কন্ডাক্টর। মিরপুর-১ থেকে ২ বা ১০ নম্বর খুচরাভাবে আগে পাঁচ টাকা দিয়ে নামতে পারতেন অনেকে এখন সেটি সাত টাকা। সিটিং বাসে যা পাঁচ, লোকালের মতো ঝক্কির বাসে তা বেড়ে সাত! এ কেমন নিয়ম, প্রশ্ন যাত্রীদের। উত্তরে কন্ডাক্টর, ‘সর্বনিম্ন বলে কথা! শুধু এই রুট নয় সব রুটেই সাতের কম দিয়ে নামতে পারবেন না। ’

আর চুপ করে না থেকে এবার সেই শিক্ষার্থীও বিতর্কে জড়ালেন। প্রতিদিন ২৫ টাকায় আনসার ক্যাম্প থেকে কালশী ও ফ্লাইওভার রুটে নতুনবাজার (বারিধরা) যেতেন। এখন এই পথে ভাড়া ২৮ টাকা (৪ গুণ ৭)!

‘আমি ২৫ টাকা দিতে গেলে কিছুতেই নিলেন না বাসের লোক। ২৮ এর কম হবেই না! এ কেমন নিয়ম। সিটিং থেকে লোকালে ভাড়া বেশি! এতে সবদিক থেকেই তো পোয়াবারো বাসওয়ালাদের। দাঁড়িয়ে বসে বেশি-বেশি যাত্রীও উঠলো, আবার ভাড়াও গেলো বেড়ে,’ বাংলানিউজকে বললেন সেই শিক্ষার্থী।

পাশাপাশি অন্যান্য রুটে ভাড়া দুই থেকে তিন টাকা কমলেও সে কমায় বিরক্তিই বেশি। কারণটা এক যাত্রী শোনালেন এভাবে, ‘নিরিবিলি যাওয়ার সব পথ রুদ্ধ। সব রুটেই এখন ঝুলে যাওয়ার দিন এসেছে। আর পুরুষের জন্য যেমন-তেমন কাটিয়ে নেওয়া তবে বৃদ্ধ, নারী এবং শিশুদের কী হবে? সিটিং থেকে লোকালে ভাড়া বেশি দিয়েও তো তাদের ভোগান্তি কিনতেই হবে অনাগত দিনগুলোতে!’

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৭
আইএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।