সেখানে জান্নাতুল ফেরদৌস আরা হক গড়ে তুলেছেন এ টুকরো স্বর্গ। এ বাগানের ফুল, ফল, পাখি আর সবুজের মোহে যে কেউই মুগ্ধ হতে বাধ্য।
জান্নাতুল ফেরদৌস আরা হকের সঙ্গে গল্প হয় তার বাগান নিয়ে। তিনি জানান, এক দুই দিনে এ বাগান তৈরি হয়নি। আজকের এ বাগান তৈরি হতে সময় লেগেছে ১০ বছরেরও বেশী সময়, ব্যয় করতে হয়েছে তিন লক্ষাধিক টাকা। এমনও অনেক স্মৃতি আছে-৬ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে আমেরিকান অ্যাম্বেসি থেকে ৫ হাজার টাকার ফুল গাছ কিনে নিয়ে এসেছিলেন তিনি।
তিনি জানান, তার এ বাগানে রয়েছে অর্ধ-শতাধিক জাতের গাছ-গাছালি। এর মধ্যে রয়েছে- গোলাপী, হলুদ ও বেগুনী রংয়ের ক্যাকটাস, সন্ধ্যা মালতী, বেলী, সাদা-নাল-নীল তারা ফুল, বেগুনী রংয়ের ডালিয়া, রঙ্গন, হাজারী গোলাপ, পাথর কুচি, লাল গোলাপ, হলুদ গোলাপ, নীল জবা, করমচা ফুল।
ফলের মধ্যে রয়েছে- কমলা, থাইল্যান্ডি জাম্মুরা, বারোমাসি আম, সুগন্ধি লেবু, জলপাই, কাজী পেয়ারা, বার কুন্ডিয়া পেয়ারা, মালদহ আম, শশা আম, আমব্রুজ, ফজলি আম, লেংড়া আম ও কামরাঙ্গা।
আর সবজির মধ্যে রয়েছে লাউ, বেগুন, দেশি জাতের মরিচ, বোম্বাই মরিচ, থাই মরিচ, ধনে পাতা, লাল আলু, চাল কুমড়ো, মিষ্টি কুমড়া ও বিভিন্ন জাতের শাক।
ওষুধি গাছের মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ উপযোগী এক ধরনের দুর্লভ গাছ- যার পাতা খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। আরো আচে পাথর কুচি পাতা, তুলসী পাতা।
পাখির মধ্যে রয়েছে মূল্যবান জাতের ময়ুরপঙ্খী জাতের কবুতর ও তিতির। এ যেন ফুল, ফল, পাখির সমাহার।
জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, খুব ছোট কাল থেকেই তার বাগান করার শখ, বিয়ের পর সংসারের চাপে করতে না পারলেও ছেলে মেয়ে বড় হওয়ার পর থেকেই তিনি বাগানের প্রতি মনোযোগী হয়ে ওঠেন।
গৃহকর্তা হাজী মফজল হক খোন্দকারের সহযোগিতার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার সহযোগিতা ছাড়া এ বাগান করা কোন ভাবেই সম্ভব হতো না। সব সময়ই তিনি এ কাজে অনুপ্রাণিত করেছেন। এ বাগান করতে অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়েছে, তা তিনিই যোগান দিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, তার এ বাগানে প্রায় ১ লাখ টাকার গাছ রয়েছে। বাগানের অবকাঠামো তৈরি করতে খরচ হয়েছে দুই লক্ষাধিক টাকার মত।
বাগানের পরিচর্যার ব্যাপারে তিনি জানান, প্রতিদিন সকাল-বিকাল নিয়ম করে পানি দিতে হয়। জৈব সারের পাশাপাশি মাঝে মাঝে মিশ্রণ সারও ব্যবহার করতে হয়।
জান্নাতুল ফেরদৌস মনে করেন, যে কেউ ইচ্ছা করলেই তার বাড়ির ছাদে সামর্থের আলোকে বাগান করতে পারেন। এতে পারিবারিক প্রয়োজনীয় সবজির ঘাটতি পূরণ হবে। মুক্তভাবে সতেজ নিশ্বাস নিতে সহায়ক হবে। পরিবেশ রক্ষায় সবার উচিত নিজ সামর্থের আলোকে খালি যায়গায় গাছ রোপন করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৭
এসএইচডি/জেডএম