ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

চুক্তি ১৮ মাসের, ২৮ মাসেও স্মার্টকার্ড দেয়নি অবার্থুর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৭
চুক্তি ১৮ মাসের, ২৮ মাসেও স্মার্টকার্ড দেয়নি অবার্থুর

ঢাকা: ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ফ্রান্সের অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে ১৮ মাসের মধ্যে ৯ কোটি ভোটারের স্মার্টকার্ড প্রস্তুত করে দেওয়ার চুক্তি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৬ সালের জুনে। কিন্তু এরপর আরো দশমাস পেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলেও প্রতিষ্ঠানটি কার্ড প্রস্তুত করে দিতে পারেনি।

এ অবস্থায় সোমবার (১৭ এপ্রিল) ইসির এনআইডি শাখার মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহেন্সিং একসেস টু সার্ভিস (আইডিইএ) বা স্মার্টকার্ড প্রকল্পের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন। আগামী ডিসেম্বরকে শেষ সময়সীমা বেঁধে দিয়ে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি হুঁশিয়ারিও দেন।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ৯ কোটি ভোটারের স্মার্টকার্ড বিতরণের লক্ষ্যে এরইমধ্যে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি কার্ড ফ্রান্সের প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অবার্থুর টেকনোলজিস হস্তান্তর করেছে। অবশিষ্ট সাড়ে ৩ কোটি কার্ড আগামী জুনের মধ্যে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সরবরাহ না করলে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সবকিছু ঠিক থাকলে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সবার হাতে স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেবো-যোগ করেন এনআইডি মহাপরিচালক। এজন্য প্রয়োজন হবে ১৮টি কাস্টমাইজেশন মেশিনের। বর্তমানে ১০টি মেশিনে দুই শিফটে কাজ চলছে। ডিসেম্বরের মধ্যে কার্ড বিতরণ সম্পন্ন করতে তিন শিফটে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটিসহ চট্টগ্রাম ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনে স্মার্টকার্ড বিরতণ শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে ঢাকায় ৫৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ কার্ড বিতরণ হয়েছে। অবশিষ্টগুলো বিতরণের কাজ চলছে। যে এলাকায় স্মার্টকার্ড বিতরণ হয়েছে, কিন্তু অনেকে পাননি, তাদের জন্য পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় দ্বিতীয়বার আবারও ঘোষণা দিয়ে বিতরণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাদের স্মার্টকার্ডে আনস্মার্ট ছবি রয়েছে, তাদের জন্য পরবর্তীতে ছবি তুলে আবার বিতরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রতিটি এলাকায় স্মার্টকার্ড দেওয়ার ৭৫ দিন আগে সংশোধনের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিই। যে অনুযায়ী আবেদন করলে ১০ দিনের মধ্যে সংশোধনের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর তা বিতরণ করা হয়।

স্মার্টকার্ড পাওয়ার পর সংশোধন করা যাবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, প্রতিটি স্মার্টকার্ডই সংশোধনের সুযোগ থাকবে। ভোটাররা নিজ নিজ উপজেলা নির্বাচন অফিসে ফরম পূরণ করে সংশোধন করতে পারবেন।

সর্বাধিক সংখ্যক স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য আমরা এরইমধ্যে জুমার নামাজে ইমামের মাধ্যমে ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছি। এছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকিংও করা হচ্ছে।

এ সময় এনআইডি মহাপরিচালক সাংবাদিকদের জন্য একটি ভিডিওগ্রাফি উপস্থাপন করেন। যেখানে এনআইডি কিভাবে বিতরণ হচ্ছে, স্মার্টকার্ড কিভাবে কাস্টমাইজ হচ্ছে, আগামীতে কি করা হবে সেসব তুলে ধরেন। এছাড়া ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা ছাড়াও বিদেশগমনসহ সেবাপ্রাপ্তিতে স্মার্টকার্ডের সুবিধা বর্ণনা দেন তিনি।  

অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে যখন ইসি চুক্তি করে তখন দেশে ভোটার ছিল ৯ কোটি ২৮ লাখের মতো। কিন্তু ২০১১ সালে বিশ্বব্যাংক ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দিয়েছিল ৯ কোটি ভোটারের স্মার্টকার্ড সরবরাহের জন্য। দেশে বর্তমান ভোটার ১০ কোটি ১৭ লাখের মতো। এই ১ কোটি ১৭ মতো ভোটারের স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য সরকারি তহবিল থেকে অর্থ যোগানের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন।

রাজধানীর ইসলামী ফাউন্ডেশন ভবনে স্থাপিত ইসির এনআইডি শাখার অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইসির জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান, এনআইডি পরিচালক আব্দুল বাতেন, এনআইডি কর্মকর্তা আশিকুর রহমানসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৭
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।