ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

যাত্রী শায়েস্তায় বাসে মাস্তান!

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৭
যাত্রী শায়েস্তায় বাসে মাস্তান! বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন- ছবি- সুমন

ঢাকা: সিটিং সার্ভিস বন্ধে সরকারের উদ্যোগের মধ্যে যাত্রী শায়েস্তা করতে মিরপুর রুটের অধিকাংশ বাসে মাস্তান প্রকৃতির লোক রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
 

বাড়তি ভাড়া নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুললে তারা যাত্রীদের অপদস্ত করছেন এবং গায়ে হাত তুলছেন।
 
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক।


 
সিটিং সার্ভিস বন্ধ এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে সরকার ও মালিকপক্ষের উদ্যোগের পর দু’দিনের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।   
 
সংগঠনের মহাসচিব বলেন, বাদুরঝোলা বাসে মহিলা, শিশু ও সিনিয়র যাত্রীরা উঠতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন। যেসব নারী দুর্ভোগ ঠেলে বাসে উঠছেন তাদের নির্ধারিত আসনে পৌঁছা বা মাঝপথে নামা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
 
‘পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, সরকারি ভাড়ার তালিকা চাওয়ায় বা সরকারি ভাড়ার তালিকা অনুযায়ী ভাড়া দিতে চাওয়ায় অনেক যাত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার, এমনকি গায়ে হাত তোলার মতো ঘটনা ঘটছে। মিরপুর রুটে অধিকাংশ বাসে মাস্তান প্রকৃতির ৩/৪ জন করে লোক রাখার দৃশ্য দেখা গেছে। বাড়তি ভাড়া কোনো যাত্রী প্রশ্ন তুললে তাদের দিকে তেড়ে এসে নানাভাবে অপদস্ত করছে। একাত্তর টিভির প্রযোজক আতিক রহমান, দৈনিক সমকালের প্রতিবেদক ইন্দ্রজিৎ সরকারসহ অসংখ্য যাত্রী তাদের হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন। ’
 
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কথিত সিটিং বাসগুলোর অধিকাংশ যাত্রী বোঝাইয়ের পরও বিভিন্ন স্টপেজে ৩-৫ মিনিট দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার জন্য হাঁক-ডাক করছে। এভাবে যাত্রী তোলায় গন্তব্যে যেতে ৩০ মিনিটের স্থলে এক থেকে সোয়া ঘণ্টা, এক ঘণ্টার পথে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগাচ্ছে। তবে আগের মতোই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় চলছেই। অধিকাংশ বাসে ভাড়ার তালিকা টানানো হয়নি।
 
মালিকপক্ষ কৌশলে রাস্তায় বাস না নামিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
 
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, গত দু’দিনে নগরের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী ৪০ শতাংশ বাস নামানো হয়নি।
 
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, স্বাধীন, হিমাচল, শিকড়, মেঘলা, বেকার, শ্রাবণ, ভূইয়া, দিশারী, নূরে মক্কা, জাবালে নূর, অনাবিল, অছিম, অগ্রযাত্রা, রবরব, গ্যালাক্সি, তেতুলিয়া বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ২৫ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
 
এছাড়া শতাব্দী, আল মক্কা, মনজিল, মালঞ্চ, বসুমতি, গাজিপুর, রাইদা, সময় নিয়ন্ত্রণসহ বেশকিছু পরিবহনে সর্বনিম্ন ভাড়া নিচ্ছে ২০ টাকা।
 
সুপ্রভাত, শুভেচ্ছা, ওয়েলকাম, তানজিল, মেশকাতসহ ৭ নম্বর রুটের বাসে সর্বনিম্ন ১০ টাকা আদায় করছে।
 
‘একদিকে অতিরিক্ত ভাড়া অন্যদিকে অতিরিক্ত যাত্রী বহনে যাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সিটিং সার্ভিসের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ না হলে তা নিয়মে পরিণত হবে। ’
 
সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষাকারী বাসের রুট পারমিট বাতিল; রুটভিত্তিক অভিযান পরিচালনা; বাসের গায়ে লেখা ‘সিটিং’, ‘স্পেশাল’র মতো শব্দগুলো মুছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়।
 
এছাড়া অতিরিক্ত আসন সংযোজনকারী বাসের আসন কমানো, স্টপেজ প্রথা বাধ্যতামূলক করা ও সময় নির্ধারণ এবং গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে আহ্বান জানায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
 
চিত্রনায়ক ও ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, সাংবাদিক আবু সাইদ খান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৭/আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।