এরপর দীর্ঘদিন হাসপাতালে থেকে প্রাণ নিয়ে ফেরেন সাদ্দাম। তবে পা এবং হাতের জখম ছড়িয়ে পড়ে শরীরের অন্য অংশে।
রানা প্লাজায় অসুস্থ ১১০ জন শ্রমিককে আজীবন চিকিৎসার সহযোগিতা করার কথা ছিল বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের। কিন্তু সঠিকভাবে এই সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন সাদ্দাম।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের শারীরিক সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করলেও তারা সহযোগিতা করতে চাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ বলছে, শুধু ব্র্যাক ডাকলেই সেই সহযোগিতা পাওয়া যাবে।
গত কয়েক মাস ধরেই পায়ে সমস্যা হচ্ছিলো সাদ্দামের। এ কারণেই ব্র্যাকের চিকিৎসা সাহায্য চান সাদ্দাম। একটানা তিন মাসের ওষুধ দেয়। তবে চতুর্থ মাসে গেলেই বেঁকে বসে ব্র্যাক কর্তৃপক্ষ।
সাদ্দাম বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাকে জানায়, আমরা ডাকলেই আসবেন। এমনি কিছু হলেই আসবেন না। আমরা কি শুধু আপনাকেই দেখবো! আর কেউ নাই! সবাইকেই দেখতে হবে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ব্র্যাক তো সবাইকে দেখবে না। ১১০ জনকে দেখবে বলেই তো তালিকা নেওয়া হয়েছে। অথচ তারা লংটার্ম সেবার কথা বলেছে। কীভাবে দেবে সেই সেবা! যেখানে কোনো কাউন্টার নাই। শুধু তারা ডাকলেই সেবা দেওয়া হবে। তাদের একটা হেল্পলাইন থাকলে আমরা সেখানে যেতে পারতাম।
মাসে ৪ হাজার টাকার ওষুধ খরচ হয় সাদ্দামের। গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ওষুধের খরচ দিয়েছে ব্র্যাক। তবে এরপর থেকে আর খরচ দেয়নি। এর আগে আমি ওষুধ কিনেছি এবং তারা পরে টাকা দিয়ে দিয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারি থেকে আর কোনো টাকা দেয়নি, যোগ করেন সাদ্দাম।
ব্র্যাকের মোহাম্মদপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নেন আহতরা। মোহাম্মদপুর কেন্দ্রের ডা. রিপন বিরূপ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেন সাদ্দাম।
এদিকে শনিবার (২২ এপ্রিল) এক জরিপ প্রতিবেদনে বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইড জানায়, আহত শ্রমিকের ১৩.১ শতাংশের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ৩০.৮ শতাংশের অবস্থা এখনও স্বাভাবিক নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, গেল এক বছরে প্রায় ৯০ শতাংশ আহত শ্রমিক শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা পাননি।
আহত নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, চিকিৎসার জন্য এখন আমরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি। দুর্ঘটনার পর প্রথম ৬-৮ মাস আমাদের কিছু সহযোগিতা করেছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এখন আর আমাদের কেউ খোঁজ নেয় না। আমরা আর কিছু না শুধু ভালো চিকিৎসা চাই। আমি তো ভালো ছিলাম। আমি আজ শারীরিকভাবে অক্ষম। আমি আমার ন্যায্য ক্ষতিপূরণ চাই। অনুকম্পা চাই না। ৫ হাজার অথবা ৫’শ টাকা ও একটা বিরানির প্যাকেট আমরা চাই না। আমরা মূল্যায়ন চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
এমএন/আরআর/এমজেএফ