শহরের পথ-ঘাটে পানি-কাদার ছড়াছড়ি। শহরতলীর বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে।
লাইব্রেরিয়ান মুজিবুর রহমান খান জানান, বৃষ্টির জন্য মানুষ খুব জরুরি কাজ না থাকলে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। সাধারণত শ’ খানেক লোক লাইব্রেরিতে পড়তে আসেন। গত কয়েক দিন ধরেই পাঠক নেই। আজ এসেছেন মাত্র একজন।
একই অবস্থা স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতেও। আজিমউদ্দিন স্কুলের শিক্ষক স্বপন বর্মণের সঙ্গে কথা হয়। জানালেন, ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি অনেক কম। গাদলা (বৃষ্টি-বাদল) শুরু হলে শহরের ভেতরের মানুষ চলাচল করতে পারলেও শহরতলীর লোকজন আসা-যাওয়া খুব একটা করতে পারেন না। কয়েক দিনের টানা বর্ষণে পথে-ঘাটে পানি জমে। যানবাহন পাওয়া যায় না। কেউ তখন পারতপক্ষে ঘরের বাইরে বেরুতে চান না।
টানা বর্ষায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘নরসুন্দা লেক সিটি প্রকল্প’। নরসুন্দা নদী খনন করে সৌন্দর্যবর্ধনের এ প্রকল্পের নানা অনিয়ম নিয়ে মানুষ এমনিতেই ক্ষুব্ধ। নদীকে খালে রূপান্তরিত করার অভিযোগ আছে। অভিযোগ আছে জায়গা দখলেরও। প্রকল্পের মূল পরিকল্পনা মতো কাজ হয়নি। অনেক দোকান উচ্ছেদ না করায় প্রকল্প ব্যাহত হয়েছে।
অর্থ ও রাজনৈতিক কারণে সেসব করা যায়নি বলে নানা সময়ে অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সদ্যসমাপ্ত প্রকল্পের নানা জায়গায় ফাটল ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। লোকজন এজন্য অনিয়ম ও নি¤œমানের কাজকে দায়ী করেছেন।
দেশের সার্বিক আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে গত কয়দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকাতেও আবহাওয়া বিরূপ। নাগরিক জীবনে বৃষ্টির এই দিনগুলোকে সঙ্গীতময় করে উপভোগ করার অতীত আর নেই। বৃষ্টিতে অবসর নিয়ে কাব্যময় অনুভূতি জাগানোর দিনও প্রায় শেষ। বাংলার বর্ষার নান্দনিক রূপ এখন দুর্যোগে আড়াল হয়ে আছে। নগরে-জনপদে বর্ষার দিনগুলো হাল-আমলে ক্রমেই হয়ে ওঠছে দুর্বিষহ ও সংগ্রামমুখর।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
এএ