বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম যে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে, সেই যুদ্ধের স্মারক ফলকের এমন অযত্ন-অবহেলায় ক্ষুব্ধ সচেতন নাগরিকরা।
ওসমানী উদ্যানের অবস্থান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় ‘নগর ভবন’র সামনে।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) উদ্যানটির বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে তোলা ১১টি সেক্টর ফলক ঘুরে অযত্ন, অবহেলা, অশ্রদ্ধা আর অসম্মানের চিত্রই দেখা যায়।
এক নম্বর সেক্টর ফলকের গায়ে লাগানো হয়েছে রঙ-বেরঙের পোস্টার। ফলকের গায়ের লেখাগুলোও অস্পষ্ট হয়ে গেছে।
দুই নম্বর সেক্টর ফলকের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা।
তিন নম্বর সেক্টর ফলকের ওপর ঘুমিয়ে আছে ছিন্নমূল মানুষ। ফলকটির ওপর শুকোতে দেওয়া হয়েছে কাপড়ও।
তিন নম্বর সেক্টরেরই মতো দশা চার নম্বর সেক্টরের। যেন কাপড় শুকোনোর জন্যই এই ফলক বানানো হয়েছে।
পাঁচ নম্বর সেক্টর ফলকের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। ফলকটির চারপাশ কুকুর, ছাগল আর মাদকসেবীদের দখলে।
ছয় নম্বর সেক্টর ফলকের এক পাশে আড্ডা দিচ্ছে মাদক সেবনকারী কয়েকজন নারী-পুরুষ। অপর পাশে পা ছড়িয়ে ঘুমোচ্ছে একজন।
সাত নম্বর সেক্টর ফলকের ওপর পা তুলে মোবাইল ফোনে আলাপ করছেন একজন। পাশে ঘুমোচ্ছেন আরেকজন।
কারও আবাসস্থলও হয়ে গেছে যেন আট নম্বর সেক্টর ফলক। এই ফলকেরও চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা।
নয় নম্বর সেক্টর ফলকটি যেন কাঁথা-কম্বল-পোশাক-আষাক শুকোতে দেওয়ার মোক্ষম জায়গা।
ছিন্নমূল মানুষের ছোটখাট বসতি যেন দশ নম্বর সেক্টরের ফলক।
এগারো নম্বর সেক্টরের ফলকের ওপর পা তুলে অথবা ফলকে বসে পা ছড়িয়ে বসে কয়েকজন। কয়েকজন সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে করছেন আয়েশ।
একেবারে নগর ভবনের সামনে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে থেকেও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলক এভাবে নষ্ট ও অসম্মানিত হতে থাকায় ক্ষুব্ধ নাগরিকদের প্রশ্ন, কেউ কি এগিয়ে আসবে? কয়েকদিনের জন্য নয়, স্থায়ীভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য?
বাংলাদেশ সময়: ০৪৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
এইচএ/