জঙ্গি আবুকে আত্মসমর্পণের জন্য বুধবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৬টার দিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার মা ফুলসানা বেগম ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রুনা খাতুনকে অটোরিকশাযোগে নিয়ে আসেন। সেখানে প্রায় ১০ মিনিট ধরে মাইকে আবুকে আত্মসর্মপণের জন্য আহ্বান জানানো হলেও ভেতর থেকে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
পরে বিকেল সোয়া ৬টার দিকে তাদের ফের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় তাদের সঙ্গে যান বাড়িওয়ালার চাচাতো ভাই সাদিকুল ইসলাম কাজল। তিনি বলেন, আমাদের এলাকার ছেলে (আবু) হওয়ায় মাত্র তিনশ’ টাকায় তাকে বাসাটি ভাড়া দেওয়া হয়। কিন্তু সে যে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েছে তা আমাদের কারো জানা ছিল না।
এর আগে ছেলের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাওয়ার খবরে অসুস্থ হয়ে পড়েন মা ফুলসানা বেগম। আবুর বাবা আফসার আলী একজন জামায়ত সমর্থক। তিনি কৃষিকাজ করেন। ছোট ছেলে সবুর আলী পেশায় রাজমিস্ত্রি। কৃষিকাজ আর ছোট ছেলের আয় দিয়েই তাদের সংসার চলে।
জঙ্গি আবুর শিবপুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শয্যাগত হয়ে পড়েছেন মা ফুলসানা বেগম। মুখে কোনো রা নেই। কেমন আছেন তাও বলতে পারেননি। এক প্রশ্নের জবাবে চোখের ইশারায় কেবল বলেন, ছেলের এমন পরিণতি তিনি চাননি!
এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানার দায়িত্ব সোয়াট টিমের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। জঙ্গি আস্তানার বিষয়ে পরবর্তী সব পদক্ষেপ তারাই নেবেন।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টি এম মুজাহিদুল ইসলাম জানান, জঙ্গি আস্তানার পুরো বিষয়টি আমরা সোয়াট টিমকে বুঝিয়ে দিয়েছি। তারা সব দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। ঘটনাস্থল রেকি করা হয়েছে। পরবর্তী সব পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত তারাই নেবেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে পৌঁছায় সোয়াট টিম।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিবগঞ্জ স্টেডিয়াম মাঠে হেলিপ্যাডে দুই হেলিকপ্টারে সোয়াট টিম এসেছে। রাতের মধ্যে হতে পারে অভিযান। এজন্য আনা হয়েছে জেনারেটর।
শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটের ত্রিমোহনীর সেই বাড়ি মসলার ব্যবসায়ী পরিচয়ে ভাড়া নিয়েছিলেন জঙ্গি রফিকুল ইসলাম ওরফে আবু (৩০)। ঘটনাস্থলে থাকা শিবগঞ্জ সদর ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মিনহাজ উদ্দিন বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে দুপুর দেড়টার দিকে দু’টি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে আসে। এরইমধ্যে ওই বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সেখানে বর্তমানে জঙ্গি রফিকুল ইসলাম ওরফে আবু, তার স্ত্রী, দুই শিশুকন্যা রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্য কোনো জঙ্গি সদস্য আছে কিনা বা থাকলেও কতোজন সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
জঙ্গি আবু স্থানীয় ত্রিমহোনী আলিয়া মাদরাসার ছাত্র ছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে নব্য জেএমবিতে যোগদেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্রগুলো। তার বাবা আফসার আলী একজন জামায়াত সমর্থক।
চাঁপাইয়ে জঙ্গি আস্তানার দায়িত্ব সোয়াটের হাতে
হেলিকপ্টারে এলো সোয়াট, রাতে অভিযান
হেলিকপ্টারে যাচ্ছে সোয়াট
ব্যবসায়ী পরিচয়ে বাড়ি ভাড়া নেয় জঙ্গি রফিকুল
চাঁপাইয়ের জঙ্গি আস্তানায় যাচ্ছে সোয়াট
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘেরাও
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
এসএস/জেডএস