এদিকে ‘বাংলাদেশ-মায়ানমার মৈত্রী সীমান্ত সড়ক’-এর নির্মাণকাজের মান বাড়াতে সময় ও ব্যয় দুটোই বাড়ছে।
২০১৮ সালের মধ্যেই এই সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব(ইকোনোমিক-ইন্টারন্যাশনাল কানেকটিভিটি) চন্দন কুমার দে এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ-মায়ানমার মৈত্রী সড়কের কাজ বাংলাদেশ অংশে চলমান আছে। আমাদের অংশে দুই কিলোমিটার সড়ক আমরা নির্মাণ করে দেবো। আমাদের অংশের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১৮ সালের মধ্যেই আমাদের অংশের কাজ সম্পূর্ণ হবে। তবে আমারা জানতে পেরেছি মায়ানমারের অংশে কাজ শুরু হতে এখনও অনেক বাকি। ওদের (মায়ানামার) কাজের গ্যাপ কবে নিরসন হবে জানি না। মায়ানমারের সঙ্গে এ নিয়ে আমাদের চুক্তি রয়েছে। সেই মোতাবেক নিজেদের অংশে সড়ক নির্মাণ করে দেবার কথা মায়ানমারের। তবে তারা একাজ কবে শুরু করবে জানি না। আমাদের অংশের সড়কটি আরও উন্নত মানের করতে সময় বাড়বে। সঙ্গে বাড়বে ব্যয়ও।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সীমান্ত গুনধুম থেকে মায়ানমার সীমান্তের টাংব্রো পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কটি হবে চার লেনের। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্তের মধ্যবর্তী নো-ম্যানস ল্যান্ডে বাংলাদেশের অর্থায়নে ৪৫ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মিত হবে।
তৃতীয় ধাপে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের সময়-ব্যয় বাড়ছে। প্রথম ধাপে প্রকল্পের ব্যয় ছিলো ৫৪ কোটি টাকা। দ্বিতীয় ধাপে ব্যয় বেড়ে হয় ৮১ কোটি টাকা। তৃতীয় ধাপে আবারও ব্যয় বেড়ে মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকায়।
জুলাই ২০১৫ থেকে জুন ২০১৭ সাল মেয়াদে বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা ছিলো। প্রকল্পের বর্ধিত সময়সীমা এখন জুন ২০১৮ সাল নাগাদ। প্রথমে দুই লেন নির্মাণের সিদ্ধান্ত ছিলো। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সড়কটি ফোর লেনে রূপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মূলত এই কারণেও সময়-ব্যয় বাড়ছে বলে জানায় সওজ।
সওজ সূত্র জানায়, ‘ইউটিলিটি শিফটিং’ এবং ভ্যাট ও ইনকাম ট্যাক্স সমন্বয়ের জন্য সময় ও ব্যয় বাড়ছে। প্রকল্পের আওতায় তিনটি ইন্টার সেকশনের নকশা পরিবর্তনের কারণে কাজের পরিধিও বেড়েছে। লেন নির্মাণ, মাটির কাজ, নতুন ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট, সার্ফেসিং বাইন্ডার কোর্স, সার্ফেসিং ওয়্যারিং কোর্স, হার্ড সোল্ডার নির্মাণকাজ বাড়ছে। রোড মার্কিং, ট্রাফিক সাইন, সাইন পোস্ট, গাইড পোস্ট এবং কিলোমিটার পোস্টের পরিমাণ ও ব্যয় বেড়েছে।
দু’দেশের সীমান্তে দুই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের ফলে মায়ানমার, চীন, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সড়কপথে সরাসরি যোগাযোগ করা যাবে। এর ফলে বাণিজ্যিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী হবে। এককথায়, সড়কটি এ অঞ্চলের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি সাধনের পাশাপাশি রাজনৈতিক সুসম্পর্ক জোরদার করবে। ‘বাংলাদেশ-মায়ানমার মৈত্রী সড়ক’ প্রকল্পের মাধ্যমে এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে নানা দিক দিয়ে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক স্থাপিত হবে। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ-মায়ানমার মৈত্রী সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৭
এমআইএস/জেএম