ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ফুড ভিলেজে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, গলাকাটা দাম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৪ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৭
ফুড ভিলেজে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, গলাকাটা দাম ফুড ভিলেজ/ছবি: বাংলানিউজ

সিরাজগঞ্জ থেকে ফিরে: সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলের অভিজাত হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট ফুড ভিলেজে রাতের আহারের জন্য এসেছিলেন শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আতিক। সঙ্গে তিন বন্ধু। অর্ডার করেন পরোটা, সবজি আর ডিম ভাজি। খাওয়া-দাওয়া শেষে বিল পেয়ে তো চোখ ছানাবড়া! ধরিয়ে দেওয়া হলো ৭১৫ টাকার বিল।

সামান্য এ খাবারে এতো বিল! জানতে চাইলেন ম্যানেজার মহব্বতের কাছে। তার সোজাসাপ্টা জবাব, নামি রেস্টুরেন্টে এ বিল সামান্যই!

এটিএম নাসির নামে এক ভুক্তভোগী হতাশা নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, এ হোটেলে খাবারের মানের সঙ্গে দামের কোনো মিল নেই।

নিম্ন আয়ের মানুষের খাবারেরও কোনো ব্যবস্থা নেই।

উত্তরবঙ্গের দূরপাল্লার বাসগুলোর যাত্রা বিরতিতে প্রথম পছন্দ আধুনিক দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ ও ডেকোরেশনে গড়ে ওঠা ফুড ভিলেজ রেস্টুরেন্ট নিয়ে দূর-দূরান্তের যাত্রীদের তিক্ত অভিজ্ঞতার গল্পের শেষ নেই।

নান্দনিকতার আড়ালে মানহীন অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করে ক্রেতাদের পকেট কেটে ঠকিয়ে যাচ্ছে রেস্টুরেন্টটি। বিল নিয়েও করা প্রতারণা। এখানে খেতে আসা যাত্রীদের দ্রুত খেয়ে বাস ধরার তাড়া থাকে। কোনো কোনো সময় বিল যা এসেছে তা দিয়েই খালাস। কিন্তু পরে মিলিয়ে দেখা যায় খাবারের চেয়ে বেশি ধরা হয়েছে টাকা।

সম্প্রতি মধ্যরাতে ঘণ্টা কয়েক এ রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেতে আসা বেশ কয়েকজন যাত্রীর কাছ থেকে পাওয়া যায় অভিযোগ।

তাদের কথার প্রমাণও মিললো রেস্টুরেন্টটির নিচতলা ও দোতলার রান্নাঘরে গিয়ে। রান্নাঘরে ঢুঁ মারতেই অপরিচ্ছন্ন ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ দেখা যায়।  

ফুড ভিলেজ/ছবি: বাংলানিউজগেঞ্জি গাঁয়ে গ্লাভস ছাড়াই খালি হাতে ময়দার খামির থেকে পরোটা তৈরি করছেন রেস্টুরেন্ট কর্মীরা। পুরনো পোড়া তেলেই ভাজা হচ্ছে পরোটা ও ডিম। তরতরিয়ে পড়ছে ঘাম।

রেস্টুরেন্টে সাধারণ খাবারের পাশাপাশি ফাস্টফুড, আইসক্রিম, দই ও মিষ্টি বিক্রি করা হয়। নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে এসব খাবার। তবে এসব নিয়ে নূন্যতম অনুতাপ নেই মালিকপক্ষের।

স্থানীয়রা জানান, অভিজাত এ রেস্টুরেন্টের মালিক বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা সিরাজ। বগুড়ার শেরপুর রোডেও রয়েছে তার এরকম আরেকটি রেস্টুরেন্ট।

রেস্টুরেন্ট কর্মীদের দেওয়া তথ্য মতে, প্রতিদিন গড়ে দুই রেস্টুরেন্ট থেকে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার ব্যবসা হয়।

ক্রেতাদের ঠকিয়েই রমরমা এমন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন হোটেল মালিক।

খাবারের পাশাপাশি শিশু শ্রমিকের আখড়া এ রেস্টুরেন্ট। দিন-রাত খাটিয়ে হোটেলকর্মীদের বেতনও দেওয়া হয় সামান্য।

এ বিষয়ে ফুড ভিলেজের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. শাহজাহান রেজা সাগর বাংলানিউজকে বলেন, রিপোর্ট না করে ফুড ভিলেজ ঘুরে দেখেন। আমরা স্বাস্থ্যকর পরিবেশেই সব করছি। ক্রেতারা আমাদের সেবায় সন্তুষ্ট।

শ্রমিকদের মজুরিতে ঠকানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছি। সবাইকে উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৭
এমএএএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।