পরে হেতম খাঁ গোরস্থানে দাফন করা হয়। তবে আবদুল আহাদ নামে নিহত মাদরাসা ছাত্রের মরদেহ বিকেলে তার নিজ গ্রামে নিয়ে গেছে পরিবার।
এদিকে নৌকা ডুবির ঘটনায় নিহত পাঁচজনের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ২৫ হাজার টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী জেলা এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস থেকে তাদের মরদেহ দাফনের জন্য সরকারি এ আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়।
রাজশাহী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, সকালে পদ্মা নদী থেকে নিখোঁজ পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দীনের নির্দেশে প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল হক বাংলানিউজকে বলেন, কালবৈশাখীতে রাজশাহী জেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের হিসাব মতে দুই হাজার ৩শ’ ৮টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারকে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী কালবৈশাখীর ঘটনায় এ পাঁচজন মিলে মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গোদাগাড়ীর কাঁকনহাটে গরু আনতে গিয়ে শরীরের ওপর গাছ ভেঙ্গে একজন এবং নৌকা ডুবিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে রোববার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজশাহীর ওপর দিয়ে মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখী বয়ে যায়। এ ঘটনায় মধ্য চর থেকে ফসল দেখে ফেরার পর পথে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে দুই মাদরাসা ছাত্রসহ পাঁচজন নিখোঁজ হন। ওইদিন রাত থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি ইউনিট।
তবে রাতে প্রতিকূল আবহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে অভিযান স্থগিত করা হয়। সোমবার (০১ মে) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আবারও উদ্ধার অভিযান চলে। কিন্তু কারো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (০২ মে) সকালে দরগার সামনে পদ্মা নদীর ঘাটে চার জনের মরদেহ ভেসে ওঠে। আর মতিহারের টাঙন এলাকায় একজনের মরদেহ ভেসে ওঠে। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ইউনিট পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, তাদের উদ্ধারকর্মীরা পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন। পরে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়া শেষে দাফনের অনুমতি দিয়ে পরিবারের কাছে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান জানান, মরদেহগুলো উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে দাফনের অনুমতি দিয়ে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতরা হলেন- পবার চরখানপুরের আসাদুল ইসলাম (৩০), দরগাপাড়ার রফিকুল ইসলাম রফিক (৪৫), রাজশাহী জামিয়া ইসলামীয়া মাদরাসার ছাত্র তামীম ইকবাল (৮) ও আব্দুল আহাদ (১০) এবং পাঠানপাড়া এলাকার রবিন হোসেন (২৮)।
রাজশাহীতে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার
বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৭
এসএস/জেডএস