বুধবার (০৩ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সেমিনারে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বর্তমান চিত্র নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।
ইকবাল সোবাহান চৌধুরী বলেন, ‘রাষ্ট্রের মধ্যে থেকে যে আইন করা হবে, তা যেন সাংবাদিকতার অন্তরায় না হয়। দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় চাই সুষ্ঠু রাজনীতি আর সুষ্ঠু রাজনীতির জন্য চাই মুক্ত গণমাধ্যম’।
তিনি বলেন, ‘যখন দেশে সামরিক শাসন ছিলো, স্বৈরশাসন ছিলো, তখন গণমাধ্যম স্বাধীন ছিলো না। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পেছনে যাদের অবদান রয়েছে, তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তখন একটি মাত্র টেলিভিশন সরকারের অধীনে চালু ছিলো। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার সরকার ব্যক্তি মালিকানায় বেসরকারি টেলিভিশন চালুর অনুমতি দিয়েছিলো’।
‘এ পেশায় টিকে থাকতে হলে অনেক সাহসী হতে হয়। দায়িত্বশীলতার সঙ্গে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের শিক্ষারও প্রয়োজন আছে। আর আমাদের সাংবাদিকতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রতিনিয়ত এডিটরিয়াল ইনস্টিটিউশনের দরকার রয়েছে। সাংবাদিকদের মধ্যে শিক্ষা থাকতে হবে। তবেই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের প্রকাশ বাড়বে’।
দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে সাংবাদিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু কোয়ালিটিফুল সাংবাদিক তৈরি হচ্ছে না। এজন্য প্রতিটি হাউজে প্রতিনিয়ত সাংবাদিকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে ভালো মানের সাংবাদিক তৈরি হবে’।
‘যত্র-তত্র লাইসেন্স নিয়ে বের হয়েছে অনেক সংবাদপত্র। কাকে এ লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নজরদারি করা দরকার’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, দিনে দিনে পত্রিকার পাঠক কমছে আর অনলাইনের পাঠক বাড়ছে। অনলাইন পত্রিকার জন্য তাই নীতিমালা করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই সাংবাদিকতার গুণগত মান আরও উন্নত করতে হবে। এজন্য শিক্ষা ও ঐক্য প্রয়োজন। সকল কিছুর মধ্যে আমাদের গোপনীয়তা রক্ষা করে তথ্য বের করতে হবে’।
দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘সাংবাদিকতা একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। এ পেশায় যারা আছেন, তাদের এ ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হবে। এ পেশার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে যেতে পারি’।
‘সংবাদ পরিবেশনে আমাদের সব সময় মাথায় রাখতে হবে, যেন স্মার্ট হেডলাইন হয়। পাঠকরা এখন চান ছোট ছোট লেখা। কোনো পাঠকই চান না বড় লেখা পড়তে। সে দিকটাতেও লক্ষ্য রাখতে হবে’।
‘আর আমাদের সাংবাদিকদের জ্ঞানচর্চার মধ্যে থাকতে হবে। তবেই ভালো ভালো প্রতিবেদন পাঠকের মাঝে তুলে ধরা যাবে’।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমানের সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান, একুশে টেলিভিশনের সিইও মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৭
এসজেএ/এএসআর