বুধবার (০৩ মে) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মত বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
জঙ্গি দমনে সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা সবচেয়ে বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছি, যেটা অনেক উন্নত দেশ পারে নাই।
জঙ্গিদের মোকাবেলায় সফলতার জন্য গোয়েন্দা সংস্থা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
সন্ত্রাস জঙ্গিবাদকে বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ঘোষণা জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। কোন মতেই আমরা এটাকে গ্রহণ করবো না। যে কোনভাবে আমরা এটাকে দমন করে মানুষের জীবনের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
সন্ত্রাস জঙ্গিবাদে জড়িতদের বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেধাবী ছাত্ররা, শিক্ষিত; দেখা যাচ্ছে বেশ ধনী পরিবারের সন্তান তাদের কেউ কেউ বিপথে চলে যাচ্ছে, জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে। তাদের মেধা, মনন, কাজ করার ক্ষমতা যেটা দেশের ভালো কাজে লাগতে পারতো। তারা ধ্বংসাত্মক কাজে কেন যাবে?
ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম কখনও সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ইসলামে নিরীহ মানুষ হত্যার কথা বলা হয়নি, নিরীহ মানুষ হত্যা সবচেয়ে বেশি গুনাহের কাজ। যারা নিরীহ মানুষ হত্যা করে তারা জান্নাতে না জাহান্নামে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদের কর্মকাণ্ডের কারণে অন্য ধর্মালম্বীরা শান্তির ধর্ম ইসলামের বদনাম করার সুযোগ পাচ্ছে। ধর্মকে হেয় প্রতিপন্ন করছে কিছু বিপথগামী।
জঙ্গিবাদ দমনে বর্তমান সফলতায় বসে না থেকে সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। মসজিদের ইমাম, ওলামা-মাশায়েকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামের শান্তির বাণী সবার সামনে তুলে ধরুন।
শিক্ষার্থীরা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে, অনুপস্থিত কেন? বিষয়গুলো দেখার পাশাপাশি জঙ্গিবাদ যে মানুষের সর্বনাশ ডেকে আনে তা শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরতে শিক্ষকদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
অভিভাবকদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আপনাদের সন্তান, আপনাদের ছেলে-মেয়ে কোথায় যায়, কার সাথে মেশে, কী করে খোঁজ নিতে হবে। সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক গড়ে তোলা; তাদের মনের কথাটা জানার চেষ্টা করা, তারা যেন সৎপথে থাকে, জঙ্গির পথে না যায়, ধ্বংসাত্মক পথে যেন না যায়, আত্মঘাতী কোনো পথে না যায় সে বিষয়ে অবশ্যই আপনারা সজাগ থাকবেন।
কোন মতেই যেন জঙ্গিবাদ সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে এ বিষয়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এ দেশকে স্বাধীন করেছি। সকল ধর্মের মানুষ বসবাস করবে একটি ভ্রাতৃত্বপূর্ণ পরিবেশে। সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি যেন আরও উজ্জ্বল হয়।
ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাদের কথা শোনেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৭
এমইউএম/এমজেএফ