ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

চীনের গড়িমসিতে পদ্মাসেতুতে রেল অনিশ্চিত

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩২ ঘণ্টা, মে ৪, ২০১৭
চীনের গড়িমসিতে পদ্মাসেতুতে রেল অনিশ্চিত

ঢাকা: পদ্মাসেতুতে রেললাইন সংযোগের বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত ঋণচুক্তি করেনি চীন সরকার। ফলে চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ফলে ২০১৮ সালে পদ্মাসেতু উদ্বোধনের দিন থেকেই রেল চলাচলের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, এর বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

চলতি অর্থবছরে এ প্রকল্পে মোট বরাদ্দ ছিলো ৩ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা।

এর মধ্যে চীনা অর্থায়ন নির্ধারিত হয়েছিলো ২ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা এবং সরকারি অর্থায়ন (জিওবি) ছিলো ৬৭৩ কোটি টাকা। চীনা অর্থায়নে অনিশ্চয়তার কারণে জিওবি’র টাকাও খরচ করা যাচ্ছে না। কারণ, এ প্রকল্পে ঋণ সহায়তা ও জিওবি মিলিয়ে সংশোধিত এডিপি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দু’টি খাতের টাকা একসঙ্গে খরচ করতে হবে। যদি ঋণ সহায়তার টাকা না পাওয়া যায়, তবে জিওবি’র টাকাও এককভাবে খরচ করা যাবে না।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (ইআরডি) থেকে চীনা দূতাবাসে ঋণচুক্তির কাগজপত্র পাঠানো হলেও এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিষয়টির সুরাহা করতে ইআরডি’র অতিরিক্ত সচিব (এশিয়া) শাহ মোহাম্মদ আমিনুল হক বর্তমানে চীনে অবস্থান করছেন।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের শেষভাগে হলেও প্রকল্পের আওতায় চীনা অর্থায়ন পাওয়া যাবে বলে আশা করা হয়েছিলো। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে চীনা ঋণ পাওয়া যায়নি।
 
সদ্যবিদায়ী রেল সচিব ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের অংশ (জিওবি) নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু চীনের অর্থায়ন না পাওয়ায় আরএডিপি’র জিওবি অংশের টাকাও আমরা খরচ করতে পারিনি। বিষয়টি চূড়ান্ত করতে ইআরডি’র কর্মকর্তারা চীনে গেছেন। আমাদের হাতে এখনও চলতি অর্থবছরের দুই মাস আছে। আমরা আশাবাদী, টাকা পাবো’।
 
তবে পরিকল্পনা কমিশনে ইতোমধ্যেই আরএডিপি’র বরাদ্দ কর্তনের সুপারিশ করেছে রেল মন্ত্রণালয়।
 
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায় গেছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এনইসি সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির টাকা এক মন্ত্রণালয় থেকে অন্য মন্ত্রণালয়ের বিপরীতে স্থানান্তর বা পুনঃউপযোজন করা যাবে না। ফলে চলতি অর্থবছরের আরএডিপিতে এক মন্ত্রণালয়ের টাকা অন্য মন্ত্রণালয়ে খরচের কোনো সুযোগ নেই। তবে একই মন্ত্রণালয় অথবা বিভাগের মোট বরাদ্দ অপরিবর্তিত রেখে তার আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর মধ্যে বরাদ্দ পুনঃউপযোজন করা যাবে।
 
এ প্রকল্পের আওতায় মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত আড়াই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করে ২০১৮ সালে পদ্মাসেতু চালুর দিন থেকে রেল চালুর পরিকল্পনা করছে সরকার। এ লক্ষ্যে ঢাকার গেণ্ডারিয়া থেকে পদ্মাসেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার নতুন ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের কথা রয়েছে। নতুন রুটটি হবে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা-নড়াইল-যশোর।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৭
এমআইএস/ এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।