পশুর হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, অতিরিক্ত হাসিল আদায় গাবতলী পশুর হাটে এখন সবথেকে বড় সমস্যা। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হাসিলের কোনো তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছামতো হাসিল আদায় করা হয়।
শুক্রবার (০৫ মে) দুপুরে গাবতলী পশুর হাটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।
তবে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিষয়ে সব থেকে বেশি অভিযোগ মাংস ব্যবসায়ীদের। তাদের কয়েকজন গাবতলী পশুর হাট থেকে গরু কিনে বের হয়ে বাংলানিউজকে বলেন, সরকার প্রতিটি গরুতে ১০০ টাকা, ছাগল প্রতি ৩০ টাকা এবং মহিষ প্রতি ১৪০ টাকা হাসিল নির্ধারিত করে দিয়েছে। কিন্তু গাবতলীর হাট কর্তৃপক্ষ এই নিয়ম মানছে না। তারা ইচ্ছামতো হাসিল আদায় করছে।
মাংস ব্যবসায়ী কালু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমি ২ টি গরু কিনেছি। আমার হাসিল দেওয়ার কথা ২০০ টাকা। কিন্তু আমাকে হাসিল দিয়ে আসতে হয়েছে ৬০০ টাকা। এই বিষয়ে প্রতিবাদ করারও কোনো সুযোগ নেই। প্রতিবাদ করলে হাটে আর ঢুকতে দেবে না।
হাট কর্তৃপক্ষ ৩০০ থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হাসিল আদায় করে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
মিরপুরের মাংস ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাবার মাংসের দোকানটি এখন আমি চালাই। দোকানের লাইসেন্স আমার বাবার নামে। আর এই অজুহাতে হাট কর্তৃপক্ষ আমার কাছ থেকে সারা বছর অতিরিক্ত হাসিল আদায় করে।
হাটের নিয়ম অনুযায়ী কোনো বিক্রেতার হাটে হাসিল বা টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই। ক্রেতা কোনো পশু কিনলে নিয়ম অনুযায়ী তাকে হাসিল দিতে হয়। কিন্তু গাবতলী হাট কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও বিভিন্ন কায়দায় টাকা আদায় করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাবতলী হাটের এক গরু ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, হাট কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন কায়দায় টাকা নেয়। তারা নিজেরা এসে টাকা নেয় না। কিন্তু অন্য লোকজন দিয়ে আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। প্রতি গরু বিক্রিতে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা তাদের দিতে হয়।
সব অভিযোগ অস্বীকার করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাবতলী হাটের এক হাসিল কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, মাংস ব্যবসায়ীরাই প্রতিনিয়ত তাদের খাজনা ফাঁকি দিয়ে লোকসানে ফেলার চেষ্টা করে। তারা হাসিল না দেওয়ার পাঁয়তারা করে। আর তাই তারা হাট সম্পর্কে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ করে।
হাটের অতিরিক্ত হাসিল আদায় সম্পর্কে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বাংলানিউজকে বলেন, রাজধানীতে মাত্র একটি স্থায়ী পশুর হাট থাকায় এই অবস্থা। গাবতলী হাটের ইজারাদাররা এই সুযোগে নিজেদের ইচ্ছামতো ইজারা আদায় করছে। তাদের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের লোকজনও জড়িত বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৯ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৭
এমএ/আরআর/আরআই