অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাথী রানী রায়। ইংরেজি স্যারের বাসা থেকে প্রাইভেট পড়ে ফিরছেন বাসায়।
বাবা চাকরিজীবী পরেশ। সাথী বলে, বাবা সব সময় পড়াশোনায় উৎসাহ দিচ্ছেন। স্কুল থেকে বাসা ৪০ মিনিটের দূরত্ব। মহাসড়ক ধরেই স্কুলে যাওয়া আসা করতে হয়। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি।
স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অন্তরা রানী। ১৩ বছরের অন্তরা বলেন, এখানে চাইলেই সাইকেলে আসা-যাওয়া করা যায়। পুরুষ মানুষের সাহায্য ছাড়াই যেতে পারি। ২ বছর আগে ৬ হাজার টাকা দিয়ে সাইকেলটি কিনে দেন বাবা। আর সাইকেলের সুবিধা হচ্ছে আর কোনো বাড়তি খরচ নেই। চাকায় হাওয়া দেয়া আর ছোট-খাট কাজ ছাড়া কোনো বাড়তি খরচ নেই। দুর্ঘটনার ঝুঁকিও কম।
দশম শ্রেণীর ছাত্রী শিফা আক্তার বলেন, সাইকেল থাকায় সঠিক সময়ে স্কুলে আসা যায়। আগে অটোর জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। এখন কারো জন্যে অপেক্ষা করতে হয় না। এছাড়াও বিকেলে সাইকেল চালিয়ে মাঠে ঘুরতে ভালো লাগে বলে জানান এ ছাত্রী।
তবে দশম শ্রেণির পর থেকে এখানে আর ছাত্রীরা সাইকেল চালান না বলে জানান রাবেয়া। তিনি বলেন, রংপুরে গিয়ে কলেজে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে আছে। সেখানেতো আর সাইকেল চালানো যাবে না। তবে যদি সম্ভব হতো, ঢাকায় ভর্তি হলেও সাইকেল চালাবো। শহরের চেয়ে অবশ্য মফস্বলে সাইকেল চালানোর সুবিধা বেশি।
ইংরেজির শিক্ষক আব্দুল আলীম বকুল এ সালন্দপুর স্কুলে চাকরি করছেন ২০০৬ সাল থেকে। জামালপুরের বাসিন্দা এ শিক্ষক বলেন, আমাদের ময়মনসিংহ অঞ্চলে বা দেশের অন্য কোথাও মেয়েদের চলাচলের এতো স্বাধীনতা নেই। যেটা ঠাকুরগাঁও বা পঞ্চগড়ে রয়েছে। এখানে মেয়েরা ইচ্ছে করলেই নিজের সাইকেল নিয়ে গন্তব্যে যেতে পারে। এ স্বাধীনতা তাদের পড়াশোনার সাফল্যতেও ভূমিকা রাখে। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, গত ৪ মে'এর প্রকাশিত এসএসসি'র ফলাফলে স্কুল থেকে তিন জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এবং তারা সবাই ছাত্রী।
প্যাডেল চেপে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া ছাত্রীদের মধ্যে স্বাধীনচেতা ভাবের উন্মোচন ঘটে। নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে আরো বেশি উৎসাহ পায় বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৭
এমএন/এসএইচ