ঢাকা, বুধবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ঘোষিত হলো শতভাগ নিরক্ষরমুক্ত ফেনী গড়ার প্রত্যয়

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১২ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৭
ঘোষিত হলো শতভাগ নিরক্ষরমুক্ত ফেনী গড়ার প্রত্যয় শতভাগ নিরক্ষরমুক্ত ফেনী গড়ার প্রত্যয়

ফেনী: গল্পটি মাত্র কিছুদিন আগের। পথের পাঠশালা সেদিন পথেই ছিলো। সমাজ বদলের শপথ নেওয়া দেখতে স্টেশনে এসেছিলেন ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান। এরপর পথের পাঠশালার সভাপতি সানজিদা নবী পুমেলের অনুরোধে সেখানে গিয়েছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা।

হঠাৎ করেই পথের পাঠশালার দীপু, ফাহাদ, মোর্শেদা, সীমান্ত, শওকত, রাহাত, রোমেসাসহ টিম পথের পাঠশালাকে ডেকে পাঠান সোহেল রানা। বলেন, একটি ছোট স্বপ্নের কথা।

'আঁই টিপসই করি ন' এর কথা।

তারপর থেকে শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। এভাবেই শনিবার (০৬ মে) ফেনীর নবীনচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরিতে এই উদ্যোগ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উদ্যোগটির প্রেক্ষাপটের বর্ণনা দিচ্ছিলেন প্রোগ্রামটির সমন্বয়ক সাজ্জাদ হোসেন দিপু।  

দীপু বলেন, এটি ম‍ূলত একটি সাক্ষরতা অভিযান।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসময় প্রকল্পটির লক্ষ্য,  উদ্দেশ্য ও সার্বিক পরিকল্পনা তুলে ধরে হয়। মোট তিনটি উদ্দেশ্য নিয়ে প্রকল্পটির যাত্রা শুরু: স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সহযোগিতায় আঞ্চলিক উদ্যোগে একটি অঞ্চলকে নিরক্ষর মুক্ত করা, বাংলাদেশকে নিরক্ষর মুক্তকরণে স্থানীয় উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় একটি টেকসই মডেল পরিকল্পনা এবং সরকারের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা।

এ প্রকল্পে কাজ করবে ৪০ জনের একটি ভলান্টিয়ার দল। মোট ১২টি সংগঠন মিলে বাস্তবায়ন করবে প্রকল্পটি। শুরু হবে ফেনী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড দিয়ে। পুরো ওয়ার্ডকে পাঁচভাগে ভাগ করে মোট পাঁচটি দল কাজ করবে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর থাকবেন ওই ওয়ার্ডের উপদেষ্টা এবং সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন সাজ্জাদ হোসেন দিপু।

প্রকল্পে সার্বিক সহযোগিতায় থাকছে জেলা প্রশাসন ও ফেনী পৌরসভা। নিরক্ষরদের তালিকা করে সঙ্গে সঙ্গেই তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হবে খাতা ও কলম।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফেনী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা বলেন, ইতিহাস তৈরির জন্য খুব জাঁকজমক কিছু করতে হয় না। ছোট কিছু উদ্যোগ ঢুকে যেতে পারে ইতিহাসে। আজ রাজাঝির দিঘির পাড়ে শুরু হওয়া এই ব্রিফিং হয়তো একদিন রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। উদ্যোগটির সৌন্দর্য হলো এর সহজ বাস্তবায়ন পদ্ধতি।

‘এটি কোনো সরকারি সংস্থা সরাসরি করছে না, সাহায্য করছে মাত্র।  সম্পূর্ণ আঞ্চলিক উদ্যোগে আঞ্চলিক সহায়তায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজটি করছে। যদি সত্যিকার অর্থেই এটিকে বাস্তবায়ন করা যায় তবে ফেনীই হবে বাংলাদেশের প্রথম কোনো জেলা বা জেলার কোনো অংশ যারা নিজেদের পুরোপুরিভাবে নিরক্ষর মুক্ত ঘোষণা করবে। ’

এতে অর্জিত হবে সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার এক অংশ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন আরও একধাপ এগিয়ে যাবে, বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ফেনী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, ফেনী সাইক্লিস্ট’র সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজসেবক  ইমন-উল-হক, ফেনী রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম নবী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, রোটারি ক্লাব অব অপূর্ব, আমরাই আগামী, রক্ত কণিকা, উই ক্যান চ্যাঞ্জ ইউথ সোসাইটি, রক্তিম ব্লাড, ডোনেট ব্লাড, সেইভ লাইফ, ফেনী সাইক্লিস্ট, অভাস ও ফেনী লিও ক্লাবসহ সর্বমোট ১২টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠণের প্রধান ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এবং একত্রে কাজ করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০, মে ০৬ ঘণ্টা, ২০১৭

** তারুণ্যের উচ্ছ্বাস দূর করবে নিরক্ষরতা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।