রোববার (৭ মে) শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে হাজির হয়ে লিখিত আকারে চার পৃষ্টার নিজের জবানবন্দি তুলে ধরেন।
বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য কথিত ধনকুবের মুসার লিখিত জবানবন্দির চুম্বকাংশ তুলে ধরা হলো, স্বাধীনতা পরবর্তী বছরগুলো আমাদের এ প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ ছিলো যুদ্ধবিদ্ধস্ত, ভয়ঙ্কর দুর্দশাগ্রস্থ ও দুর্ভিক্ষ পীড়িত একটি দেশ।
অন্যদিকে শুল্ক গোয়েন্দা আমার ব্যবহৃত যে গাড়িটি জব্দ করেছে সে গাড়িটি আমি স্বপ্রনোদিত হয়ে শুল্ক গোয়েন্দার প্রধান কার্যালয়ে পৌঁছে দিয়েছি। জব্দকৃত গাড়িটি ফারুক-উক-জামান চৌধুরীর ক্রয়কৃত। ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই ভোলার বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশন করেছেন যার নম্বর ৩২-০০১৩৫৯৩৭২। এর কিছুদিন পরে ভোলার বিআরটিএ থেকে ভোলা ঘ ১১-০০৩৫ ডিজিটাল উক্ত গাড়িতে লাগানো হয়। ফারুক-উজ-জামান তখন রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪১৩ টাকা ও ফিটনেস সনদের জন্য ১ হাজার ৮৭ টাকা পরিশোধ করেছেন।
এছাড়া বাৎসরিক রিনিউয়াল ফি হিসেবে গত ২০১৫/১৬ অর্থ বছরের জন্য আয়কর ট্যাক্স বাবদ ৭৫ হাজার টাকা ও ট্যাক্স টোকেন বাবদ ৫ হাজার ৮০২ টাকা এবং ২০১৬/১৭ অর্থ বছরের জন্য ৭৫ হাজার টাকা ও ট্যাক্স টোকেন বাবদ ৫ হাজার ৮০২ টাকা সরকারি খাতে জমা দিয়েছেন। অর্থাৎ তার নামে রেজিস্ট্রেশন হওয়ার পর থেকে সব ট্যাক্স পরিশোধ আছে। তাই ফারুক-উজ-জামান উক্ত গাড়ির বৈধ মালিক। অর্থাৎ একজন বৈধ মালিকের কাছ থেকে সব কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করার পর ২০১৫ সালের ১ আগস্ট পরিবারের সদস্যদের ব্যবহারের জন্য এবং অফিসের জরুরি প্রয়োজনে গাড়িটি ভাড়া নেয়া হয়।
গাড়িটি কারনেট ডি প্যাসেজ সুবিধায় ২০১০ সালে যুক্তরাজ্যের নাগরিক ফরিদ কবীর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পুনরপ্তানি করার শর্তে গাড়িটি আমদানি করেন। কিন্তু কাস্টমস আইনের ১৯৬৯ এর ধারা ১৮ এবং ৩২ এর লঙ্ঘন বলে গাড়িটি আটক করা হয়েছে। সুতরাং কাস্টমস আইনের ১৯৬৯ এর ধারা ১৮ এবং ৩২ কোনোভাবেই উক্ত গাড়ির মালিক ফারুক-উক-জামান ও ভাড়ায় ব্যবহার করা ব্যক্তির উপর দায় বর্তায় না।
অপরদিকে গাড়িটি ব্যবহারের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকিকৃত অর্জিত অর্থ বিভিন্নভাবে রূপান্তর হয়েছে। যা মানি লন্ডারিং আইনে ২০১২ ইং (সংশোধিত ২০১৫) ২ (শ) এর শুল্ক সংক্রান্ত সম্পৃক্ত অপরাধ। কিন্তু গাড়িটি ভাড়ায় ব্যবহারকারির উপর মানিলন্ডারিং আইনটির দায় কোনোভাবেই বর্তায় না। আর গাড়িটি ভোলার বিআরটিএ থেকে ভুয়া কাগজ পত্রাদির মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে এবং ১৭ লাখ টাকার শুল্ক করাদি পরিশোধের তথ্য দেয়া হয়েছে। কিন্তু রেজিস্ট্রেশনকালে উক্ত বিল অব এন্ট্রি আমার না। আর ভোলা বিআরটিএ থেকে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন হলেও সে দায়ভার আমার উপর বর্তায় না। অর্থাৎ যদি কোনো কিছু ঘটে থাকে তার দায়ভার যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফরিদ কবীরের।
উল্লেখ্য, ৪০ বছর থেকে আমি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রখ্যাত নিষ্কলঙ্ক আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী ধনকুবের হিসেবে বিশ্ব সমাদৃত। আমার মেধা, যোগ্যতা ও প্রজ্ঞায় সম্পূর্ণ বিদেশে অর্জিত আমার সমস্ত অর্থই সুইস ব্যাংকে ২০০৮ সাল থেকে জব্দ। ইহা একটি সত্য ঘটনা। আর এ কারণে আমি বিভিন্ন মারাত্মক রোগে আক্রান্ত। যা থেকে এখনও আমি সুস্থ নই এবং ৯ মাস ধরে আমি অসুস্থ।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪৩ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৭
এসজে/বিএসকে