সোমবার (০৮ মে) সন্ধ্যা ৭টায় কসবা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটের ফলাফলে পৌরসভার প্রথম মেয়র হয়ে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাসের সঙ্গী হলেন নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আব্দুস শুকুর।
যদিও গত ২৫ এপ্রিল পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
কসবা আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা মার্কায় আব্দুস শুকুর পেয়েছেন ১ হাজার ৬১১ ভোট। তার আগের প্রাপ্ত ভোট ছিলো ৩ হাজার ৪৭১ ভোট। সব মিলিয়ে তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৮২ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী আবু নাসের পিন্টু এ কেন্দ্রে ভোট পেয়েছেন ২৬৭টি। তার আগের প্রাপ্ত ভোট ছিলো ৩ হাজার ৬২৫ ভোট। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮শ’ ২৫ ভোট পেয়েছেন তিনি। আগে আটটি কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে ১৫৪ ভোটে এগিয়ে থাকা পিন্টু এবার ১ হাজার ১৯০ ভোটে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হলেন।
এছাড়া ৩ হাজার ৩০৪ ভোট নিয়ে ৩য় অবস্থানে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বর্তমান প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন এই কেন্দ্রে পেয়েছেন ১৫৮ ভোট। ফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে আব্দুস শুকুরকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন বিয়ানীবাজার পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন।
তিনি বলেন, এ ওয়ার্ডে ৩ হাজার ৩৮৮ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয় ২ হাজার ৭৫ ভোট। এরমধ্যে ২৩টি ভোট বাতিল হয়। এ কেন্দ্রে শতকরা ৬২ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে।
এছাড়া ৩নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে পাঞ্জাবি মার্কায় শাহাব উদ্দিন ৬৪৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কবির আহমদ ডালিম মার্কা নিয়ে পেয়েছেন ৫৫৫ ভোট। এ ওয়ার্ডে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে অটোরিক্সা নিয়ে মরিয়ম বেগম পেয়েছেন ৩ হাজার ১৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রাজিয়া বেগম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৮৩০ ভোট।
গত ২৫ এপ্রিল পৌরসভার ১০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হলেও ৩নং ওয়ার্ডের কসবা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট প্রদান নিয়ে সংঘর্ষ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে ওই কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করা হয়। নির্বাচন কমিশনের উপ সচিব মো. নুরুজ্জামান তালুকদার স্বাক্ষরিত এক আদেশে পুনঃনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৯৭ সালে বিয়ানীবাজার সদর ইউনিয়ন নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন সাবেক পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন। তার মেয়াদান্তেই ২০০১ সালে পৌরসভায় উন্নীত হয় বিয়ানীবাজার। তৎকালীন সময়ে পৌর প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হন থানা নির্বাহী কর্মকর্তা। নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে মেয়াদ পূর্তির জন্য মামলা ঠুকে দিয়ে ষোলটি বছর পার করে দেন তফজ্জুল হোসেন। সর্বশেষ পৌর নির্বাচনে সব কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে মর্মে গত ২ মে উচ্চ আদালতে রিট করেন তফজ্জুল। কিন্তু এবার তিনি নির্বাচন আটকে রাখতে ব্যর্থ হন। রোববার (০৭ মে) উচ্চ আদালত তার রিট খারিজ করে দেন। ফলে মামলার বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে এলো বিয়ানীবাজার পৌরসভা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৭
এনইউ/জেডএস