ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কীভাবে বলেন দেশে আইনের শাসন নেই?

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১০ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৭
কীভাবে বলেন দেশে আইনের শাসন নেই? সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখছেন।

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “প্রধান বিচারপতি কীভাবে বললেন দেশে আইনের শাসন নেই।

বিচার বিভাগ যে স্বাধীন তার একটাই তো প্রমাণ আছে। একজন নেত্রীর একটা মামলায় যদি ১৪০ দিন সময় দেওয়া হয়।

বিচার বিভাগ স্বাধীন বলেই তো এতদিন সময় দেওয়া হয়েছে। ”
 
সোমবার (০৮ মে) রাতে ১৫তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে বলেই তো এই সময়টা দেওয়া হয়েছে। এমনকি কথায় কথায় রিট। একই মামলায় যদি ৪০-৫০ বার রিট হয়। আর যদি রিট নিষ্পন্ন হয়। তাহলে স্বাধীনতা নাই কীভাবে বলেন? যদি স্বাধীনতা নাই থাকতো তাহলে এটা চাইলো কীভাবে? এই একটাইতো দৃষ্টান্ত যথেষ্ট।

আইনের শাসন না থাকলে বা স্বাধীন না হলে তো দিতে পারতো না। আমাদের ওই ধরনের মানসিকতা থাকতো তাহলে নিশ্চই দিতে পারতো না। আমরা তো সেটা করিনি। ইচ্ছামতো সময় দিয়ে যাচ্ছেন... দিয়েই যাচ্ছেন। কাজেই বিচার বিভাগ যে স্বাধীন এই একটা উদাহরণই যথেষ্ট। ”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “যারা এ সুযোগ নিচ্ছেন, তারাও এক সঙ্গে তাল মিলান আইনের শাসন নাই। জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস সারা বিশ্বব্যাপী একটা সমস্যা। অন্তত বাংলাদেশে সেটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট তৎপর। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া থেকে শুরু করে সব ব্যাপারে তারা অত্যন্ত সচেষ্ট। এক একটা উৎসব আসে সে সময় সব কিছু তারা নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের নিরাপত্তা দেয়। আইনের শাসন আছে বলেই আজকে এটা সম্ভব। নইলে এটা সম্ভব হতো না। এখন যদি জঙ্গিদের ধরা হয় বা গুলিতে জঙ্গিরা মারা যায় তাহলে সেটাতো আর মানবাধিকার লঙ্ঘন বলা যায় না। একটা মানুষের জন্য হয়তো শত মানুষকে মুত্যু বরণ করতে হতো অথবা পঙ্গুত্ব বরণ করতে হতো। শুধু পঙ্গু বা মৃত্যু হতো না জাতীয় সম্পদের ক্ষতি হতো। তাদের ধরলেই বা তারা নিজেদের বোমা মেরে সুইসাইড করে যাচ্ছে বা তারা মরলেই আমাদের বিএনপি নেত্রীরও প্রাণ কাঁদে, আবার অনেকের প্রাণ কাঁদে। কেন সূত্রটা কী? যোগসূত্র কী? এদের সাথে কোনো গোপন যোগাযোগ, তাদের আছে কি না বা সূত্র আছে কি না? কারণ বিএনপির আমলেই তো জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস এগুলি শুরু হয়েছিল। সেই বাংলা ভাই প্র্রকাশ্যে দিবালোকে আওয়ামী লীগের নেতাকে কেটে  টুকরো টুকরো করে  কেটে রেখেছিল।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানে ৭৫০টি পত্রিকা, ৩৪টি টিভি রয়েছে। দেখলাম অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে এই দেশে বাক স্বাধীনতা নাই। যারা রিপোর্টটা করেছে তাদেরকে বলবো এই টিভিতে বসে বসে দিনরাত আমাদের বিরুদ্ধে সমানে কথা বলা হচ্ছে। টক শো, আলোচনা একেবারে স্বাধীনভাবে কথা বলছে। আমাদের সমালোচনা যখন করা হয় কই কেউ কি তাদের গিয়ে গলা টিপে ধরেছে যে একথা বলা যাবে না।

তিনি বলেন, সংবাদপত্র লিখেই যাচ্ছে, হ্যাঁ, কেউ যদি হলুদ সাংবাদিকতা করে, মিথ্যা অসত্য তথ্য দেয়, কারও যদি চরিত্র হনন করে নিশ্চই তারও অধিকার আছে যে সেখান থেকে নিজের উপর মিথ্যা দোষারোপ থেকে রক্ষা পাবার। সেটা নেবার অধিকার সকলেরই আছে।

সমালোচকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বদনাম করা এটাই তাদের চরিত্র। মনে হচ্ছে বদনাম করতে পারলেই নাগরদোলার মতো ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। সেই আশায় তারা থাকে। সেই আশায় গুড়ে বালি। এদেশে সেটা আর হবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের গণমাধ্যম সম্পূর্ণভাবে স্বাধীনতা ভোগ করছে, স্বাধীন আছে। বাক স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে। স্বাধীনতা ভোগ করতে হলে দায়িত্ব পালন করতে হয়। কারও অধিকার ক্ষুন্ন করা স্বাধীনতা না।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৭
এসএম/আরআইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।