তবে নদের অদৃশ্য কান্নায প্রকৃতি, পরিবেশ-প্রতিবেশকে ভারী করে তুলছে। বাতাস ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
আশপাশের নদের পড়ের কোথাও কোথাও জমাট বেঁধেছে পুরু পলিথিনের স্তর। এ ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই বুড়িগঙ্গার পরিণতি বরণ করতে হবে মেহেরপুর, দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা, কোটচাঁদপুর, চৌগাছা, বারবাজার, যশোর, বসুন্দিয়া, নওয়াপাড়া, ফুলতলা, দৌলতপুর, খুলনা ও বাগেরহাট এলাকার বুক দিয়ে বয়ে চলা ভৈরব নদকে।

নওয়াপাড়া কলেজ রোডের কলেজ ছাত্র আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ভৈরব নদ কিছু অসাধু মানুষের জন্য আজ মরতে বসেছে। আসলে ভৈরবকে মানুষ ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করছে।
তিনি জানান, ভাঙাগেট আলিপুরে ভরাট হয়ে নদ এখন খাল হয়ে গেছে। কিছু অসাধু ব্যক্তি নেমেছে ভৈরব দখলের প্রতিযোগিতায়। ভৈরবের বুকে পানিবিহীন অংশে ঘর-বাড়ি, শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরি করে করেছে কেউ কেউ। বিশেষ করে নওয়াপাড়া, এমনকি যশোর শহর এলাকায় অনেকে স্থায়ী পাকা স্থাপনাও গড়ে তুলছেন।

বাজার খেয়াঘাটে নোঙর ফেলা এম ভি মেঘনা কার্গোর কর্মচারী শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, নদের পানি এতো বেশি নোংরা আর ময়লা তা ব্যবহার করা যায় না। দুর্গন্ধ আসে পানি থেকে। তাছাড়া নদ ভরাট হয়ে যাওয়ায় জোয়ার ছাড়া কার্গো থেকে মাল লোড-আনলোড করা যায় না।
জানা যায়, ২৪৯ কিলোমিটার ভৈরব নদের অধিকাংশ স্থানই মৃতপ্রায়। স্থানভেদে ভৈরবের প্রশস্ততা কোথাও এক থেকে দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তবে বর্তমানে সেটি মাত্র ২০ থেকে ২৫ ফুটে এসে দাঁড়িয়েছে।
ভৈরবের দু’পাড়ে হেঁটে দেখা যায়, শিল্পশহর খ্যাত নওয়াপাড়ায় নদীর তীরবর্তী সরকারি খাসজমি দখল করে পণ্যের গুদাম, ঘাট, আবাসিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে।

নদের অনেক জায়গায় চর পড়ে বেশি উঁচু হয়ে উঠেছে। ওইসব জায়গায় পণ্যবাহী জাহাজ যাচ্ছে আটকে। দীর্ঘদিন খনন না করায় পণ্যবাহী বার্জ ও কার্গো ঠিকমতো নওয়াপাড়ায় আসতে পারছে না। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন।
যশোরের নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি ভৈরব নদ খননের। যদিও কাজ শুরু হয়েছে, তবে বাজার এলাকায় খনন কাজ চলছে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৭
এমআরএম/এএ