ঢাকা, শনিবার, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ০১ মার্চ ২০২৫, ০০ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

মৈত্রী-২

রেল কর্তারা কলকাতা যাবেন ২২ মে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৬ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৭
রেল কর্তারা কলকাতা যাবেন ২২ মে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী ট্রেন; ছবি-ফাইল ফটো

ঢাকা: অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে এলো দীর্ঘ প্রতীক্ষিত খুলনা ও কলকাতার মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস-২ চলাচলের দিনক্ষণ। ঘুচে যাচ্ছে রাজনীতির মারপ্যাঁচে পড়ে থাকা দুই বাংলার ৫২ বছরের রেল চলাচলের প্রতিবন্ধকতা।

আলোচনা করতে চলতি মাসের ২২ তারিখে বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয়ের পাঁচজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কলকাতা  যাচ্ছেন। এ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে আছেন রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ( অপারেশন) হাবিবুর রহমান।

অন্য কর্মকর্তারা হলেন- মো. শামসুজ্জামান অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রেলিং স্টক), গৌরচন্দ্র রায় অতিরিক্ত মহাপরিচালক (ফাইন্যান্স), খায়রুল আলম (রেলের পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার) এবং কালীকান্ত ঘোষ (উপ-পরিচালক অপারেশন)।

বাংলাদেশ রেলওয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা  বাংলানিউজকে বৃহস্পতিবার বিকেলে (মে ১৮) জানান, তারা কলকাতায় ২৩ ও ২৪ মে দু’দিন ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

বাংলাদেশে প্রতিনিধিদল খুলনা ও কলকাতার মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস-২ চলাচলের সময়সূচি, কোচ ও সিট পজিশন, ভাড়া শেয়ারিংসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে কথা বলবেন।

রেলের ওই কর্মকর্তা  আরও জানান, ঢাকা-কলকাতা ৫৯০ কিলোমিটার রেলপথ দূরত্বের হারেই খুলনা-কলকাতা ১৮০ কিলোমিটার রেলপথের ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।  

কলকাতা বৈঠকে ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। তবে সূত্র ভারতীয় রেল কর্মকর্তাদের নাম জানাতে পারেনি।

আগেই বাংলাদেশ ও ভারতের রেল, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, রাজস্বসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে বৈঠক হয়েছে।

খুলনা থেকে মৈত্রী-২ ছেড়ে গিয়ে পৌঁছাবে কলকাতার চিৎপুরে। খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে চিৎপুর থেকেই। ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থেকে মৈত্রী-১ ও পৌঁছায় কলকাতার চিৎপুরে। মৈত্রী-২ এ চেপে চার ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা কলকাতা যেতে পারবেন।   

এখন অবধি খুলনা-কলকাতা দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস-২ চলাচলের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ রয়েছে পয়লা জুলাই থেকে। যদিও দুই দেশের কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন পয়লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল ২০১৭) থেকে যাতায়াত শুরু হবে।

খুলনা-কলকাতা দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস-২ চলাচল করবে সাতটি যাত্রী কোচ নিয়ে। এ সাতটি যাত্রী কোচে আসন সংখ্যা থাকবে ৪১৮টি। থাকবে এসি ও নন এসি সব ধরণের আসন বিন্যাস। যাত্রীদের আগ্রহের ওপর নির্ভর করবে পুরো ট্রেন এসি করার।

প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে একদিন খুলনা-কলকাতা মৈত্রী-২ চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মৈত্রী-২ চলাচলের সমস্যাবলী খুঁজে দেখা ও যাত্রীদের সাড়া পাওয়ার পর সাপ্তাহিক ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে খুলনা-কলকাতা যাত্রীবাহী ট্রেন ফের চালু উপলক্ষে ট্রায়াল হয় গত ৮ এপ্রিল। বাংলাদেশ রেলওয়ের চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেনের নেতৃত্বে এদিন মৈত্রী-২ এ ছিলেন ৩৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

ট্রেনটি বেনাপোল আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে পৌঁছায় সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে। এ সময় নয়াদিল্লি সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সে যৌথভাবে পতাকা নেড়ে ট্রেনটির যাত্রা শুরু করেন।

সীমান্তে আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুরে ট্রেনটি পৌঁছে যায় কলকাতার চিৎপুর স্টেশনে। পরদিন (এপ্রিল ০৯) সকাল সোয়া আটটায় কলকাতা থেকে ছেড়ে আসে  মৈত্রী এক্সপ্রেস-২ ট্রায়াল ট্রেনটি।

১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে খুলনা-কলকাতা এবং গোয়ালন্দ-কলকাতা রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বৃটিশ শাসনামলে এ দুটি রুটে রেল চালু হয়। সে সময় বরিশাল অঞ্চলের লোকেরা স্টিমারে করে খুলনা এসে রেলে চেপে কলকাতা যেতেন।

বরিশাল থেকেই যাত্রীরা স্টিমার ও রেলের টিকিট কেটে নিতে পারতেন। ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সারা হতো রেলের মধ্যেই। বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হতো না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৭
এসএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।